সরকারকে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষমতা দিয়ে জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (সংশোধন) বিল ২০২৩’ পাস হয়েছে।

রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২১তম অধিবেশনে স্থায়ী কমিটির সুপারিশকৃত আকারে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়ে যায়। বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এদিকে বিলটিকে জনস্বার্থ বিরোধী উল্লেখ করে বিলটি পাসের প্রতিবাদে গণফোরামের মুকাব্বির খান সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন।

আরো পড়ুন: সংসদ থেকে ওয়াক আউট করলেন মোকাব্বির খান

বর্তমান প্রক্রিয়ায় ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে গণশুনানী করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ট্যারিফ সমন্বয় বাড়াতে (মূল্য বাড়াতে) ও প্রচলিত আইনে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় মূল্য নির্ধারণে সময় বেশি লাগে বলে দ্রুততম সময়ে ট্যারিফ সমন্বয়ের (মূল্যবৃদ্ধির) লক্ষ্যে সরকারের ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধন করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমামও বিলটি পাশের বিরোধিতা করে বলেন, সরকারের বিদ্যুৎ খাতে কোন পরিকল্পণা ছাড়াই কুইক রেন্টাল এনেছেন। যার ফলে ৯০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাটিসি ট্যাক্স দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।

এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠান ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে গণফোরামের মুকাব্বির খান জনস্বার্থ বিরোধী বিলটি পাসের অভিযোগ তুলে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন।

এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালির কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করিবার জন্য তাদের উৎপাদন বাড়ানো, সঞ্চালন, পরিবহণ ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেবার সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুদকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রাখিয়া বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের ট্যারিফ সমন্বয় করা প্রয়োজন। অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখিবার স্বার্থে নিয়মিত ও দ্রুততম সময়ে ট্যারিফ সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসি'র পাশাপাশি সরকারের ক্ষমতা সংক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বিষয়টি জরুরি বিবেচনায়, বর্ণিত বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান।