×

সারাদেশ

গঙ্গাচড়ায় বাড়িতে হামলা, পুত্রবধূ আহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:১৯ পিএম

গঙ্গাচড়ায় বাড়িতে হামলা, পুত্রবধূ আহত

ছবি: ভোরের কাগজ

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বিমাতার ষড়যন্ত্রের শিকার ছেলে ও বউকে ভিটে ছাড়া করতে পিতা ও তার ভাই-ভাতিজারা মিলে ছেলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাংচুর, লুটপাটসহ মারপিট ও ছুরিকাঘাত করেছে।

গুরুতর আহত পুত্রবধূ আঙ্গুরা বেগম (২৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এ ঘটনায় বাবা-ছেলে উভয়েই একে অপরের বিরূদ্ধে থানায় মামলা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের পশ্চিম রাজবল্লভ গ্রামে।

শনিবার সরেজমিনে পশ্চিম রাজবল্লভ গ্রামে উপস্থিত হলে এলাকাবাসী জানায়, ওই গ্রামের আজগার আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার দ্বিতীয়া স্ত্রী শরিফা বেগম (৪৮) দীর্ঘ দিন ধরে সতীনের ছেলে ফারুক মিয়া ও পুত্রবধু আঙ্গুরা বেগমকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছিল।

এরই জের ধরে বিমাতা শরিফা বেগমের গাছের চারা পুত্রবধূ আঙ্গুরা বেগমের ছাগলে খেয়েছে অজুহাতে গত ১৩ জানুয়ারি সকালে গালিগালাজ করে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে ঝগড়া শুরু হয়। ফলে পিতা শফিকুল ইসলাম, বিমাতা শরিফা বেগম, শফিকুল ইসলামের ভাই ছকমেল, ভাতিজা শরিফুল, সুজা ও তাদের স্ত্রীরা মিলে পুত্র ফারুক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার স্ত্রী আঙ্গুরা বেগমকে মারপিট ও ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। একই সঙ্গে তারা ফারুক মিয়ার বাড়ি ভাংচুর করে। তার ঘরের বিভিন্ন মালামাল ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

এলাকাবাসী আহত ফারুক ও আগঙ্গুরাকে উদ্ধার করে দ্রুত গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করায়। আহত আঙ্গুরা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রংপুুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকে।

আহত ফারুক মিয়া আক্ষেপের সাথে জানান, শিশুকাল থেকে মৎ মায়ের অত্যাচারে আমার জীবন অতিষ্ঠ। সৎ মায়ের কারণে বাবাও সৎ হয়ে গেছে। সারা জীবন হোটেলে ও বেকারিতে শ্রমিকের কাজ করে টাকা বাবাকে দিয়েছি। বাবা আমার নামে জমি লিখে দিতে চেয়েছিল। এখন বাবার জমির এক কোণে বাড়ি করে রিক্সা চালিয়ে খাই। তারা আমাকে ওই জমিতেও থাকতে দিবে না। ওখানে থাকলে তারা আমাদেরকে মেরে ফেলবে। আমি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় যাব?

হামলাকালে ভাই ছকমেল ও ভাতিজা শরিফুল আহত হয়ার ঘটনায় শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২২ জানুয়ারি গঙ্গাচড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ছেলে ফারুক ও পুত্রবধূ আঙ্গুরাসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপরদিকে, অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুত্র ফারুক মিয়া বাদী হয়ে গতকাল থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এতে পিতা শফিকুল ইসলাম, বিমাতা শরিফা বেগমসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে শফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে ও সরাসরি যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাতিজা (ছকমেল এর ছেলে) শরিফুল ইসলাম জানান, ফারুকের পিতাই ফারুকের বাড়ি ভাংচুর করেছে। তবে আঙ্গুরাকে ছুরিকাঘাত করেছে তা জানেন না।

একই বিষয়ে গজঘন্টা ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, ফারুক মিয়া আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। আমি ঘটনাটি মীমাংসার জন্য পিতা শফিকুল ইসলামকে ডেকেছিলাম। কিন্তু তার জমি থেকে ছেলে ফারুক বাড়ি না সরালে কোন মীমাংসায় তিনি বসবেন না বলে জানিয়েছেন। পুত্রবধূ আঙ্গুরা বেগমকে আহত করার ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুলাল হোসেন জানান, বাবা-ছেলের ঘটনাটি বিব্রতকর। পিতার মামলা (নং- ১৯, তারিখ- ২২ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয়েছে। ছেলের এজাহারও হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App