সব রেকর্ড গুঁড়িয়ে প্রথম দিনে ‘পাঠান’র আয় ১০৬ কোটি

আগের সংবাদ

শাবিপ্রবির সোনালী ব্যাংকে চুরির সময় যুবক আটক

পরের সংবাদ

ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা: অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির আশঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ

অধিকৃত পশ্চিম তীরে জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের এবারের হামলার ঘটনাটি প্রায় দুই দশকের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণঘাতী হামলা। ইসরায়েলি সেনারা একটি ভবনে গুলি, গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ব্যবহার করে অভিযান চালানোর ঘটনায় নয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের সেনারা একজন ‘ইসলামী জিহাদি’ জঙ্গিদের ধরতে গিয়েছিলো যারা বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছিলো। তবে এখানে ঐতিহাসিক কিছু বিষয় রয়েছে। গত বছর পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলের অভিযান বাড়ছিল ও নতুন প্রজন্মের সশস্ত্র ফিলিস্তিনদের সঙ্গে প্রায়শই তাদের সংঘর্ষ হচ্ছিল। খবর বিবিসির।

অনেকেই ২০০২ সালের এপ্রিলের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে এটি দ্বিতীয় ‘ইন্তিফাদা’ বা ফিলিস্তিনই আন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করছিল। ওই সময় ইসরায়েল একটি পূর্ণ সামরিক অভিযান চালিয়েছিল, যা জেনিনের যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। ওই সময় অন্তত ৫২ জন ফিলিস্তিনি ও ২৩ জন ইসরায়েলি সেনা মারা যায়।

এর জের ধরে ফিলিস্তিনরা ইসরায়েলে অনেকবার আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিলো। জেনিন শিবিরের বড় অংশই তখন ধ্বংসের মাত্রার দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে ফিলিস্তিনরাও নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু করে। গত বসন্তে ইসরায়েল ‘ব্রেক দ্যা ওয়েভ’ নামে অপারেশন শুরু করে।

এটি করা হয়েছিলো ব্যাপকভাবে ফিলিস্তিনদের বন্দুক ও ছুড়ি ব্যবহার করে হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায়। এর মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে কথিত ইসলামিক স্টেটস অব শাম অ্যান্ড ইরাক (আইএসআইএস) সমর্থকরা। বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে রাদ হাজেমও ছিলেন, যিনি তেলআবিবের একটি বারে (মদের দোকানে) তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।

ফলে জেনিন আবারো আলোচনায় আসে। ইসরায়েলের তল্লাশি, গ্রেপ্তার ও অভিযান বেড়ে যায়। ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, তারা আরও হামলা ঠেকাতে পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে পুরো পশ্চিম তীরে মৃত্যুর ঘটনা আরও বেশি। গত বছর সেখানে অন্তত দেড়শ’ ফিলিস্তিনই মারা গেছেন।

যাদের অনেকেই শুধু সামরিক গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে। কেউ কেউ হয়তো শুধু পথচারীই ছিলো। ইসরায়েলকে সবসময়ই জাতিসংঘ ও অন্য কিছু মানবাধিকার সংস্থা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের জন্য অভিযুক্ত করে আসছে।

ফিলিস্তিনই কর্তৃপক্ষের সেখানকার শহরগুলোতে সীমিত শাসন রয়েছে। তারা এরই মধ্যেই জেনিন ও নাবলুসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন এই কর্তৃপক্ষ ‘৯০-এর অসলো শান্তি প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।

আব্বাসের দল ফাতাহ পার্টির প্রবল প্রতিপক্ষ হামাস। ফিলিস্তিনই কর্তৃপক্ষ এখন ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়টি সমন্বয় করছে যার অর্থ হলো তারাই কিছু মিলিশিয়ার তথ্য আদান প্রদান করছে। যদিও প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলছেন জেনিনে হামলার কারণে নিরাপত্তা সমন্বয় বন্ধ করে দেবেন তারা।

তবে ২০২১ সালেই জেনিন শরণার্থী শিবির ও নাবলুসে কর্তৃত্ব হারিয়েছে। মে মাসে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের লড়াইয়ের সময় থেকেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সেখানে অজনপ্রিয় হয়ে পড়ে। আবার ইসরায়েলের একটি জেল থেকে ছয় বন্দী টানেল খুড়ে বেরিয়ে গয়ে পড়ে ধরা পড়েছিলো। এর সবাই জেনিনের।

প্রকৃত অর্থে জেনিন ও নাবলুসের নতুন প্রজন্মের যোদ্ধারা মাহমুদ আব্বাসের কর্তৃপক্ষকে প্রত্যাখ্যান করছে। তারা সশস্ত্র হচ্ছে ও প্রতিষ্ঠিত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হারাচ্ছে। তারা নিজেদের জেনিন ব্যাটালিয়ন বলছে আর নাবলুসে তাদের পরিচিতি লায়নস ডেন হিসেবে। জর্ডান থেকে চোরাচালান হয়ে আসা কিন্তু ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স ঘাঁটি থেকে চুরি বা বিক্রি হওয়া অস্ত্র তারা ব্যবহার করছে। আর তাদের অনেকেই অনেক কম বয়সী যারা ২০০২ সালের ঘটনা মনেও করতে পারে না।

ডি- এইচএ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়