×

সারাদেশ

মেহেরপুরে মহামারির রূপ নিচ্ছে অনলাইন জুয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৩৫ এএম

মেহেরপুরে মহামারির রূপ নিচ্ছে অনলাইন জুয়া

প্রতিকি ছবি

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়া যেভাবে বিস্তার লাভ করছে, খুব শিগগিরই এটা মহামারি আকার ধারণ করবে। করোনা মহামারিসহ শারীরিক অসুস্থতাজনিত যত মহামারি আছে সবকিছু নির্মূলে সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ থাকলেও অনলাইন জুয়া নামক মহামারি নির্মূলে সমাজ এবং রাষ্ট্রের কোনো উদ্যোগই যেন কাজে আসছে না। বর্তমানে জেলার প্রায় সব গ্রামে কিশোর থেকে শুরু করে পঞ্চাশোর্ধ্ব অনেকেই অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। বিশেষ করে মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর ও মহাজনপুর গ্রাম ‘জুয়া গ্রাম’ নামেই বেশি পরিচিত। অনেক কিশোর অনলাইন জুয়াড় কারণে পড়াশোনা বাদ দিয়েছে। অনেকেই কাজকর্ম বাদ দিয়ে এই খেলায় ও খেলা পরিচালনায় (এজেন্ট) যুক্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েক মাসে মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়াড় সঙ্গে জড়িত থাকায় ৫টি মামলায় ৩১ জন এজেন্টকে আটক করেছে ডিবি ও থানা পুলিশ। এছাড়াও এজাহারে আরো প্রায় অর্ধশত নাম আছে, যারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে মুজিবনগর উপজেলার মাহফুজুর রহমান ওরফে নবাবের হাত ধরেই মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার সূচনা হয় বলে অনেকেরই ধারণা। যা গত কয়েক বছরে ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। ওয়ান এক্সবেট, মেলবেটসহ শতাধিক সাইট ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম। রাশিয়াভিত্তিক এসব চ্যানেলে জড়িত প্রায় হাজারখানেক মানুষ। চ্যানেল চালিয়ে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকা সেদেশে পাচার করছে। গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গেছে, প্রতি মাসে ২০০ কোটি টাকা সেদেশে পাচার করছে এসব জুয়াড় সঙ্গে জড়িতরা। এই হিসাবে গত এক বছরে অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। অনুসন্ধানে ও গোয়েন্দা বিভাগের তথ্য মতে শুধু মেহেরপুর জেলা থেকেই মাসে ২০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে অনলাইন জুয়ায়। দেখা গেছে যে, অনলাইন জুয়াড় এই আসরে প্রথম পর্যায়ে কেউ কেউ লাভবান হয়ে পরবর্তীতে লোভে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছে। অনেক অনলাইন জুয়াড়ি হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছে। এলাকায় গুঞ্জন আছে, এজেন্ট ব্যাংকের এক ম্যানেজারকে গুলি করে হত্যার নেপথ্যে এই অনলাইন জুয়া। এর ছোবল থেকে বাদ যায়নি ৭০ বছরের বৃদ্ধারাও। মুজিবনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন নামে একজনের বিরুদ্ধে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই এলাকার বৃদ্ধারা। ২০-২৫ জন বৃদ্ধার অভিযোগ, করোনার অনুদান দেয়ার কথা বলে দেলোয়ার হোসেন তাদের নাম ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সিম কিনেছেন। সেগুলো দিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হচ্ছে। মেহেরপুর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের দায়িত্বে থাকা এসআই মনির জানান, এ পর্যন্ত মেহেরপুর থেকে ৫টি মামলায় ৩১ জনকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রয়েছে আরো প্রায় অর্ধশত। মেহেরপুর জেলা ডিবি পুলিশের ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, জোর তৎপরতা চলছে জুয়াড় সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য। আটককৃতরা ‘ওয়ান এক্সবেটের’ জুয়াড় সঙ্গে জড়িত থাকার কথা এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়াড় টাকা লেনদেন হতো বলে সিআইডির কাছে স্বীকার করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App