×

মুক্তচিন্তা

বৈষ্ণব শিক্ষাব্যবস্থার স্বীকৃতি প্রয়োজন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৩ এএম

বৈষ্ণব শিক্ষাব্যবস্থার স্বীকৃতি প্রয়োজন

বৈষ্ণবধারা হিন্দুধর্মের একটি শাখা সম্প্রদায়, বিশ্বের মোট হিন্দু জনসংখ্যার ৬৭.৬ শতাংশ বৈষ্ণবধারায় বিশ্বাসী। দেশে চলমান শিক্ষা ব্যবস্থার এক অনন্য ধারা গুরুকুলভিত্তিক বৈষ্ণব শিক্ষা ব্যবস্থা। এ শিক্ষা ব্যবস্থার শেকড় প্রোথিত সমাজের গভীরে, বৈষ্ণবধারা ও হিন্দুধর্মের বিধানের সঙ্গে সমাজের আপামর হিন্দুদের সম্পৃক্ত করতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত শিক্ষা ব্যবস্থা। এ শিক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ভগবান বিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণের সন্তুষ্টি অর্জন। এছাড়া পারলৌকিক মুক্তিসহ ইহলোকিক মানবতার বিকাশ সাধন এবং দেশপ্রেমিক যোগ্য নাগরিক তৈরি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলেও এ শিক্ষা ব্যবস্থার কোনো স্বীকৃতি নেই। এসব বিবেচনায় আলোকিত সমাজ গড়তে এর স্বীকৃতি প্রয়োজন। এ শিক্ষা ব্যবস্থা স্বীকৃতি পেলে একজন ব্যক্তি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় জ্ঞানে বলীয়ান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক বিশ্ব ও মনন সম্বন্ধে অভিজ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে দেশ গড়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও ক্ষমতা লাভ করবে। তাই এই শিক্ষা ব্যবস্থার স্বীকৃতির জন্য সব মঠ, মিশন ও কুলগুরুদের গুরুবাড়ি (গুরুকুল) সমন্বয়ে বাংলাদেশ ভক্তি বেদান্ত শিক্ষা বোর্ড নামে শিক্ষা বোর্ড গঠন এবং শিক্ষাদানের জন্য মঠ ও আশ্রমগুলোকে ভক্তিবেদান্ত গুরুকুল নামে অবহিত করা প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থাটি বৈষ্ণব মাসের দিনপঞ্জি অনুযায়ী পরিচালিত হবে, সরকার নির্ধারিত ছুটিসহ বৈষ্ণব ব্রতগুলোতে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রাথমিক স্তর হবে ৮ বছর যা বৈষ্ণবাদ্যম, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি বৈষ্ণবাদ্যম ও ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি বৈষ্ণব উচ্চাদ্যম নামে পরিচিত হবে। মাধ্যমিক স্তর হবে ৪ বছর যা বৈষ্ণবমধ্যম, নবম থেকে দশম শ্রেণি বৈষ্ণব মধ্যম ও একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি বৈষ্ণব উচ্চ মধ্যম নামে পরিচিত হবে। স্নাতক (সম্মান) হবে ৪ বছর মেয়াদি, যা উপাধি ডিগ্রি হিসেবে ভক্তিশাস্ত্রী বা বৈষ্ণব শাস্ত্রী নামে পরিচিত হবে। স্নাতকোত্তর হবে ১ বছর মেয়াদি, যা উপাধিত্তর ডিগ্রি হিসেবে ভক্তি আচার্য বা বৈষ্ণবাচার্য নামে পরিচিত হবে, বৈষ্ণবাচার্যের বিষয়গুলো- অচিন্ত্য ভেদ-অভেদ বেদান্ত (ব্রহ্ম-মাধ্ব-গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শন), ভক্তিবেদান্ত, ভক্তি সর্বভূম, মুখ্য উপনিষদ, বৈষ্ণব উপনিষদ, বৈষ্ণব সংহিতা, বৈষ্ণব তন্ত্র, বিষ্ণু পুরাণ, গরুড় পুরাণ, নারদ পুরাণ, পদ্ম পুরাণ, বরাহ পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ, ইযোগা-ব্যায়াম, শ্রীমদ্ভাগবদগীতা স্টাডিজ, অদ্বৈত বেদান্ত, বৈশেষাদ্বৈত বেদান্ত, জ্যোতিষ। বৈষ্ণব শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষ্ণবাচার্য সমাপনকারী ছাত্ররা উপাধিত্তর স্তরে পঠিত বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য ১/২ বছর মেয়াদে ১টি বিষয়ে আত্মস্থ করার মানসে বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সে লক্ষ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমাপ্তকারী শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক এ শিক্ষা এমফিল বা পিএইচডির সমমান বিবেচনা করে সেভাবে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন হবে। গবেষণার মাধ্যম হবে প্রধানত সংস্কৃত, বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি। এছাড়া গীতা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তির ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৬ বছর। শ্রীমদ্ভাগবদগীতা মুখস্থকারী শিক্ষার্থীকে ১ বছরে প্রাথমিক স্তরের পুস্তকগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় পড়িয়ে সেই শিক্ষার্থীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

রিপন কুমার দাস : ট্রেড ইন্সট্রাক্টর, ডোনাভান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালী। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App