বিদ্যা ও সংগীতের দেবী সরস্বতীর কৃপা-লাভের আশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করছে পুন্যার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে পুন্যার্থীদের ঢল নামে জগন্নাথ হল মাঠে। সকাল সাড়ে ছয়টায় প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজার কার্যক্রম শুরু হয়। মূল পূজা শুরু হয় ৯টা ১৫ মিনিটে। এর পরে চলে পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ। পূজা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকায় ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এসেছেন পূজায় অংশ নিতে।

হিন্দু ধর্মমতে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চেপে দেবী সরস্বতী জগতে আসেন। আর বিদ্যা, বাণী ও সুর পাওয়ার আশায় সরস্বতীর পূজায় নিবেদিত হন পূজারীরা।

এবার জগন্নাথ হল মাঠে ৭১টি বিভাগের নিজস্ব প্রতিমা, চারুকলা অনুষদের একটি ও হলের একটিসহ মোট ৭৩টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়। চারুকলা অনুষদের প্রতিমাটি হলের পুকুরে এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমাটি হলের উপাসনালয়ে স্থাপন করা হয়। এবার পূজার পরিচালনা করেন হল উপাসনালয়ের পুরোহিত সাধন চক্রবর্তী।

গত দুবছর করোনার কারণে পূজা উদযাপন বন্ধ থাকায় এবার ব্যাপক পরিসরে পূজা উদযাপন করছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত দত্ত। তিনি বলেন, গত দুবছর আমরা পূজা উদযাপন করতে পারিনি ঠিকই কিন্তু এবার বিরতি দিয়ে পূজা উদযাপন করছি। এটা গত কয়েক বছরের তুলনায় সেরা উদযাপন।

ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে পরিবারসহ পূজায় এসেছেন দেবলাল চক্রবর্তী। এত বড় পরিসরে পূজা উদযাপন ও সুন্দর পরিবেশ নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার খুবই ভালো লাগছে। আমি পরিবারসহ এখানে এসেছি। পুরো পরিবেশটাই উৎসবমুখর দেখে আমি আনন্দিত।

এদিকে সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হলেও উৎসব ছেয়ে গেছে বাকি সব শিক্ষার্থীর মাঝে। সকাল থেকে পূজা উৎযাপন করতে মাঠে এসেছিলেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রঞ্জু ইসলাম। তিনি বলেন, আমি পূজায় এসেছি সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। বেশ ভালোই লাগছে।

এদিকে পূজার অনুষ্ঠানে যেন কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা, পুলিশ, আনসার ও হল প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে উল্লেখ করে হল প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড মিহির লাল সাহা বলেন, সকাল থেকেই পূজায় মানুষের ঢল ছিলো। এত মানুষ আসবে আমরা সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। যেহেতু দুবছর পরে আমরা পূজা উদযাপন করছি সবার মধ্যেই বেশ উৎসব উৎসব একটি রেশ রয়েছে। আর আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। পুলিশ, সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। আশা করছি কোনো রকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ছাড়াই সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপিত হবে।