×

জাতীয়

স্পিকারের সঙ্গে সিইসির বৈঠক দুপুরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৯ এএম

স্পিকারের সঙ্গে সিইসির বৈঠক দুপুরে

ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বৈঠকে বসছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য আমরা সংসদ সচিবালয়ের কাছে বৈঠকের সময় চেয়েছিলাম। আজ দুপুর ২টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, ২৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী গতকাল সোমবার থেকে নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়ে গেছে। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সবকিছু নির্ধারণ হবে। এক্ষেত্রে ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ৬ উপনির্বাচনের পর ভোটার তালিকা করা হবে।

সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছর তার পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল কার্যভার গ্রহণ করেন। সেই মোতাবেক তার দায়িত্বের ৫ বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। এদিকে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে পদটি শূন্য হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে।

২০১৮ সালে সর্বশেষ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ওই বছর ২৫ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ৭ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ফেব্রুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ১৮ ফেব্রুয়ারি। সে সময় ২২ দিনের মধ্যে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি একক প্রার্থী থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ থেকে মো. আবদুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে মো. আবদুল হামিদ সেদিন থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২২ এপ্রিল তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

এরপর মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ওই বছর ২৪ এপ্রিল ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী, দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি আর এ পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। তাই দেশবাসীর কৌতূহল এবার নতুন রাষ্ট্রপতি কে হবেন তা নিয়ে।

সংবিধানে যা বলা আছে : এদিকে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে ওই পদ শূন্য হলে মেয়াদ শেষের তারিখের পূর্ববর্তী ৯০ হতে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্যপদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ৪৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি ৩৫ বছরের কম বয়স্ক হন, অথবা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য না হন, অথবা কখনো এই সংবিধানের অধীন অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হয়ে থাকেন।

অন্যদিকে ৫০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংবিধানের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের মেয়াদে তার পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। তবে শর্ত থাকে যে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। আবার একাধিক্রমে হউক বা না হউক- দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতির পদে কোনো ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকবেন না। স্পিকারের উদ্দেশে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে রাষ্ট্রপতি স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতি তার কার্যভারকালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন না এবং কোনো সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে রাষ্ট্রপতিরূপে তার কার্যভার গ্রহণের দিনে সংসদে তার আসন শূন্য হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি : রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘নির্বাচনী কর্তা’ হিসেবে এ নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এজন্য একটি জাতীয় সংসদ কক্ষে সংসদ সদস্যের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নির্বাচনী কর্তা সভাপতিত্ব করবেন। সংসদের অধিবেশন চলাকালে নির্বাচনের প্রয়োজন হলে কমিশন ভোট গ্রহণের অন্যূন ৭ দিন আগে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে ভোটের সময়সূচি নির্ধারণ করবে। আর সংসদ অধিবেশন না থাকলে ভোটগ্রহণের দিনে স্পিকারের সঙ্গে অন্যূন ৭ দিন আগে আলোচনা করে সংসদের বৈঠক সরকারি প্রজ্ঞাপন দ্বারা আহ্বান করবে।

রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মনোনয়নপত্রে একজন সংসদ সদস্যের প্রস্তাবক ও একজন সংসদ সদস্যের সমর্থক হিসেবে স্বাক্ষর থাকতে হবে। এছাড়া যিনি মনোনীত হবেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্মতিসূচক তারও একটি বিবৃতি থাকতে হবে। এ নির্বাচনে ভোটার হবেন সংসদ সদস্যরা। কমিশন একটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। বৈধ একাধিক প্রার্থী থাকলে এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন শেষে একাধিক প্রার্থী থাকলে সংসদের বৈঠকে নির্ধারিত দিনে দুপুর ১২টার পর ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ যেমন প্রকাশ্যে হবে, তেমনি ভোট গণনাও প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত হবে। সর্বোচ্চ ভোট যিনি পাবেন তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হবেন। আর যদি একাধিক প্রার্থী একই ভোট পেয়ে যান, তবে তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ভোটের ফলাফল নির্ধারণ করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App