×

জাতীয়

বইমেলার প্রস্তুতি পর্ব শুরু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৪ এএম

বইমেলার প্রস্তুতি পর্ব শুরু

ফাইল ছবি

৩ বছর আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে তছনছ হয়ে যায় একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বব্যবস্থা। ছন্দপতন ঘটে প্রাত্যহিক জীবন-ভ্রমণ-শিল্প-সংস্কৃতি-বিনোদন থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনীতি-রাষ্ট্র-সমাজ সবকিছুতে। ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে আয়োজিত বইমেলাও তার চিরাচরিত প্রথা ভেঙে সময়-তারিখ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই বদলে যায়। তবে এবার আর প্রথা ভাঙছে না। এমন কথা জানালেন, বাংলা একাডেমির প্রশাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ও অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ এর পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ভাষার মাসের প্রথমদিনই শুরু হবে অমর একুশে বইমেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন। তাই দ্রুত এ আয়োজনের প্রস্তুতি সারছে বাংলা একাডেমি।

সোমবার দুপুরে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলার উভয় প্রান্তে চলছে হাতুড়ি শাবলের ঠোকাঠুকি, প্যাভিলিয়নের মেঝেতে ইট-সুড়কি বিছানোর কাজ। নির্মাণ শ্রমিকদের দৌড়ঝাঁপ।

এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা করা সূচি অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন। এর ২ ঘণ্টা পর বিকাল ৫টায় মেলার দুয়ার খুলবে সবার জন্য, যা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবার মেলার প্রতিপ্রাদ্য ঠিক হয়েছে ‘পড় বই গড় দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

এবার স্টল বিন্যাসে পরিবর্তন আনা হয়েছে উল্লেখ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বললেন, এবারো মেলার মূল মঞ্চ থাকবে বাংলা একাডেমি অংশে। আর গ্রন্থ ‘মোড়ক উন্মোচন’ ও ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে।

তিনি বলেন, এবার নতুন ১২টি প্রকাশনা সংস্থাসহ ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮৫৮টি ইউনিট বরাদ্দ দিয়েছে বাংলা একাডেমি। এছাড়া প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩৪টি। ৪৭২টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে ৭১১টি ইউনিট; যার মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে ৪০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৬০৩ ইউনিট এবং শিশু চত্বরে ৭১টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৮ ইউনিট দেয়া হয়েছে। বেশি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। অপরদিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৩টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ১৪৭টি ইউনিট। মেলা পরিচালনা কমিটি গত রবিবার লটারির মাধ্যমে এগুলোর স্থান বিন্যাস করেছে।

জানতে চাইলে দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সময় প্রকাশনের কর্ণধার ফরিদ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের তো প্যাভিলিয়নের কাজ বেশি। বাংলা একাডেমি এবার স্টল বরাদ্দ দেরিতে দেয়ায় কম সময়ের মধ্যে আমাদের কাজ শুরু করতে হচ্ছে দ্রুত। তবে আমরা আগে থেকেই কিছুটা ফ্রেম ওয়ার্ক করে রেখেছি, যে কারণে দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পন্ন করা যাবে আশা করছি। তিনি বলেন, মেলা নিয়ে আমি আশাবাদী। কারণ দেশের মানুষ এই মেলাকে গ্রহণ করেছে। একটু পরিবেশ পেলেই তারা বইমেলায় আসতে চায়।

মুক্তচিন্তার কর্ণধার শিহাব বাহাদুর বলেন, স্টল বরাদ্দ হওয়ার পরপরই কাজ শুরু করে দিয়েছি। সময়ও কম। তাছাড়া সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যে কারণে একটু আগেভাগে কাজ শুরু করলে দরদাম করেই কাজ সামাল দেয়া যাবে।

এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর বইমেলায় কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ীই মেলা পরিচালনা করা হবে। তা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ম ভাঙলে ৭ সদস্যের টাস্কফোর্স কাজ করবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমির গেটে চট বিছিয়ে প্রথম বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরো অনেকে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকাকালীন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App