কাউখালীতে পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনবহুল স্থানে ইট ভাটা নির্মাণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। উপজেলার ২নং আমরাজুড়ী ইউনিয়নের কুমিয়ানে দীর্ঘদিন ধরে জি.বি এফ ব্রিক ইট ভাটা তৈরি করে প্রভাবশালীরা পরিবেশ দূষিত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী ইট ভাটা নির্মাণের ১ (এক) কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি-ঘর ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয় এমন কোনো প্রতিষ্ঠান থাকতে পারবে না। অথচ এই ইট ভাটার ১ (এক) কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেশ কিছু বাড়ি-ঘর, বাগানবাড়ি, আমরাজুড়ি বাজার ও ফেরিঘাট। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে পূর্ব আমরাজুড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্ব আমরাজুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোস্তাফা হায়দার একাডেমি, মন্দির, হাফেজি মাদ্রাসা, জামে মসজিদ। এই সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই ভাটার নির্গত ধোঁয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, বিষাক্ত এই ধোঁয়া ধীরে ধীরে মানবদেহে প্রবেশ করার ফলে ক্যান্সারসহ জটিল দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে মানুষ। অথচ প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে বছরের পর বছর এই জনবহুল স্থানে ইটেরভাটা তৈরি করে ইট পোঁড়াচ্ছেন প্রভাবশালীরা। স্থানীয় নেতা বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের পিরোজপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক নিমাই মণ্ডল জানান, ভাটা এলাকা থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে তেমন কোনো গাছপালা বৃদ্ধি হতে পারে না। গাছ লাগানোর পর ১০-১৫ ফিট বড় হওয়ার পর ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে মাথা আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায়। ফলে এলাকায় বড় ধরনের কোনো গাছপালা জন্মাতে পারে না। এছাড়া নারকেল সুপারির ফলন একেবারেই কমে গেছে । মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম দাস জানান, ভাটা এলাকায় অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, ফলে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে জি.বি এফ ব্রিক এর স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন মুন্সি জানান, সরকারি আইন মেনে ইট ভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছি। এর আশেপাশে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশালের পরিচালক আব্দুল হালিম জানান, ইট ভাটার কাছাকাছি কোনো জনবসতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে ঐ এলাকায় ইট ভাটা তৈরি করা যাবে না। তবে কাউখালীর ইট ভাটাটি কিভাবে অনুমোদন পেয়েছে তা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে দেখা হবে।