×

সারাদেশ

অস্ত্র ঠেকিয়ে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি: সাব-রেজিস্ট্রারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:০৮ এএম

অস্ত্র ঠেকিয়ে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি: সাব-রেজিস্ট্রারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের ৩ কোটি টাকা মূল্যের ভিটে-বাড়ির রেজিস্ট্রি দলিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন বিচারক। গতকাল সোমবার দুপুরে ফেনীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ বেলাল উদ্দিন এ আদেশ দেন।

তিনি তার আদেশে গত ২৮ ডিসেম্বর মতিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ৭৭৯১নং দানপত্র ও ৭৭৯২ নাম্বার সাবকবলা দালিলের ১৯১ শতক ভূমির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ফেনী জেলা সচেতন নাগরিক সমাজ কমিটির সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন নান্ন, বাংলাদেশ মানবাধিকার ফেনী জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম নান্টু ও সোনাগাজী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট মানিক চন্দ্র শর্ম্মা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে অস্ত্র ঠেকিয়ে এই সংখ্যালঘুর পরিবারের জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার বিষয়ে মতিগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার ও প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ ও ৬ ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দলিল দুটি বাতিলের আদেশ চেয়ে আদালতে সাব-রেজিস্ট্রার সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলার চরছান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রপ্ত শিক্ষক ইউপির ২নং ওয়ার্ডের রামকুমার মহাজন বাড়ির অভয় চরন দাশের ছেলে রবিন্দ্র দাসের ১৯১ শতক ভূমি পার্শ্ববর্তী কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার মুচাপুর গ্রামের মোস্তফা মিঞার ছেলে আলমগীর হোসেন, সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া এলাকার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে যুবদলের ক্যাডার ৪০ মামলার আসামি খুরশিদ আলম, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের সেরাজুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন ও একই এলাকার সওদাগর বাড়ির মৃত সেরাজুল হকের ছেলে হারুনুর রশিদ, শাহআলম ও দেলোয়ার হোসেন মতিগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার আকরাম হোসেন রিয়াদের যোগসাজশে দুটি দলিলে রেজিস্ট্রি করে নেয়। যার বাজারমূল্য তিন কোটি টাকা। এর আগে ভূমিদস্যুরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রবিন্দ্র কুমার দাশের কাছ থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও জমির সব দালিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতিয়ে নেন।

এরপর তারা তাকে বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখে হত্যা ও লাশ গুমের ভয় দেখিয়ে ২৮ ডিসেম্বর রাত ৭টায় অস্ত্র ঠেকিয়ে দলিলে স্বাক্ষর ও তা রেজিস্ট্রি করিয়ে নেয়। পরে তাকে বন্দুক ও পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা দেয়া হবে না জানায়।

ভুুক্তভোগী রবিন্দ্র দাস এ বিষয়ে ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুষেন চন্দ্র শীল, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখত অভিযোগ করেন।

ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আইনগত সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুর উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় মামলা হলেও এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভূমিদুস্যুরা শিক্ষকের পুকুরটি দখলে নেয়ারও চেষ্টা করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App