×

সারাদেশ

রিলে পদ্ধতিতে ফসল চাষে ঝুঁকছেন রাজশাহীর কৃষকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৩০ পিএম

রিলে পদ্ধতিতে ফসল চাষে ঝুঁকছেন রাজশাহীর কৃষকরা

ছবি: ভোরের কাগজ

রিলে পদ্ধতিতে ফসল চাষে ঝুঁকছেন রাজশাহীর কৃষকরা

রিলে পদ্ধতিতে ফসল চাষে ঝুঁকছেন রাজশাহীর কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে ধান ও সরিষা চাষে বাজিমাত করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও রাজশাহী জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সৈকত। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৩ একর জমিতে এ ফসল ফলিয়েছেন তিনি। এতে পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসূমে জেলায় আমন ধান চাষ হয় আবাদ ৮০ হাজার ৮৩২ জমিতে। উৎপাদন হয় ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬৮ মেট্রিক টন ধান। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৬ মেট্রিক টন বেশি। এ বছর জেলায় ৪২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে সরিষা। এরমধ্যে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ করেছেন সাড়ে ১২ হাজার কৃষক। এ পদ্ধতিতে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাগমারা উপজেলায় সরিষা চাষ হওয়া জমির পরিমাণ ৮ হাজার ৬১০ হেক্টর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় সবচেয়ে এগিয়ে থাকা গোদাগাড়ী উপজেলায় ২৪ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। বিঘাপ্রতি সাড়ে ১৮ মণ করে ধান উৎপন্ন হয়। এরপর একই জমিতে ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন উপজেলার প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার কৃষক। প্রতি বিঘায় ৫ মণ করে সরিষার ফলন হতে পারে বলে কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রা। চলতি সপ্তাহে এ সরিষা তুলতে শুরু করবেন কৃষকরা। এরপর প্রায় ৬৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হবে।

এ উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নে সর্বপ্রথম রিলে পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন যুবলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত সৈকত। তিনি ভোরের কাগজকে জানান, গত ১০ অক্টোবর আমন ধান কেটে একই জমিতে তিনি সরিষা চাষ করেছেন। একই খরচে একাধিক ফসল ফলিয়ে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। ধানচাষে সর্বমোট ৯০ হাজার টাকা খরচ করে আয় করেছেন ২ লাখ টাকা।

সৈকত বলেন, সরিষার ফলনও ভাল হয়েছে। অন্তত দেড় লাখ টাকার সরিষা বিক্রি হবে। তিন একর জমিতে আমি এ ফসল ফলিয়ে দারুণভাবে লাভবান হওয়ায় এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এ পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন আগে ধান কেটে সরিষা বপন করেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ঝুঁকি নিয়ে রিলে পদ্ধতিতে চাষ শুরু করে তিনি বর্তমানে বেশ স্বাবলম্বী।

বরেন্দ্র অঞ্চলে রিলে পদ্ধতির ব্যবহার কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কৃষকদের উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে আসবে। ফসল আগাম ঘরে উঠায় বাড়তি দামও পাবেন কৃষকরা। এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, রিলে পদ্ধতির চাষে সেভ হচ্ছে সময়, সাশ্রয়ী হচ্ছে খরচ। ফলে এটি খুবই সময়োপযোগী একটি পদ্ধতি। কৃষকরা এ পদ্ধতির সুফল পেতে শুরু করেছেন। আগামীতে এ পদ্ধতিতে চাষের হার আরও বাড়বে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেনের মন্তব্য জানতে রবিবার (২২ জানুয়ারি) অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনও রিসিভ করেননি। তবে এ কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) শারমিন সুলতানা ভোরের কাগজকে জানান, রিলে পদ্ধতি দেশের কৃষিক্ষেত্রে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এটির ফলে কৃষকরা দুই ধানের মাঝে আরেকটি ফসল ফলাতে পারছেন। ধান উৎপাদন ঠিক রেখে তেলের আবাদও বাড়ছে। তারা প্রচারণা চালিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন কৃষকদের। এটি ভূমিকা রাখবে জাতীয় পর্যায়ে। কৃষকরাও স্বাবলম্বী হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App