×

জাতীয়

আলতাফ মাহমুদ ছিলেন সাংবাদিক সমাজের আদর্শের প্রতীক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:৪২ পিএম

আলতাফ মাহমুদ ছিলেন সাংবাদিক সমাজের আদর্শের প্রতীক

ছবি: ভোরের কাগজ

সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, প্রতিভা আর গুণে স্বনামধন্য প্রয়াত আলতাফ মাহমুদ ছিলেন সাংবাদিক সমাজের অহংকার ও আদর্শের প্রতীক। তিনি ভোগবিলাসী জীবন-যাপনে বিশ্বাসী ছিলেন না। শতভাগ সহজ-সরল জীবন-যাপন করে গেছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার আদায়, পেশাগতস্বার্থ সংরক্ষণ, তাদের রুটি-রুজির আন্দোলনে নেতৃত্বে আপোষহীন ছিলেন তিনি। যার কারণে সবার হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছিলেন সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদ। আমৃত্যু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল আলতাফ মাহমুদ চেতনাগত বিপরীত মেরুতে অবস্থানকারীদের মধ্যেও সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন তার নেতৃত্বগুণে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রয়াত সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদ স্মরণে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে আয়োজিত স্মরণ সভায় সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেভ দ্য জার্নালিস্ট ও জার্নালিস্ট ভয়েস অব বাংলাদেশ।

স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, আলতাফ মাহমুদ সাংবাদিকতায় আসেন গত শতকের সত্তরের দশকে। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে (ডিইউজে) পাঁচবার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন আলতাফ মাহমুদ। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তিনি ছিলেন আপসহীন নেতা। তিনি বলতেন, আমাদেরকে বাংলাদেশের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কাজ শুরু করতে হবে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।

মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়া বলেন, সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদ নেতা হিসেবে হালুয়া-রুটি ভাগাভাগির নীতিতে বিশ্বাস করতেন না। সাংবাদিক নেতা হিসেবে ক্ষমতাকে সুযোগ-সুবিধার আদায়ে ব্যবহার করেননি। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হয়েও অন্য নেতাদের মতো রাষ্ট্রীয় সুবিধা নেননি। সাংবাদিকদের যে কোন দাবি আদায়ের সংগ্রামে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

তিনি আরো বলেন, আমারা যখন ইউনিয়ন করতাম তখনও আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ ছিলো, কিন্তু এখনকার মতো টেবিল ভাগাভাগি ছিলো না।

সাংবাদিক জামাল উদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক আদর্শ থাকলেও সেই আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেননি। কখনো নীতি বিসর্জন দেননি। তিনি এমন নেতা ছিলেন যে, কোন সাংবাদিক বিপদে পড়ার খবর পরই তার পাশে দাঁড়িয়ে যেতেন।

ডিইউজে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম বলেন, আলতাফ মাহমুদ একজন স্বজ্জন পরোপকারী মানুষ ছিলেন। তিনি আজীবন সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন। প্রতি বছর অন্তত এক থেকে দুইটি স্মরণ সভার আয়োজন করা উচিত।

তিনি আরো বলেন, পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় তার মতো সাংবাদিকের আদর্শ মেনে চলা উচিৎ।

পলিটিক্যাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আলম হোসেন খান বলেন, নি:সন্দেহে এক সৎ-আর্দশবান সাংবাদিক নেতা ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। সাংবাদিক সমাজের সবচেয়ে বড় নেতা হয়েও তিনি সাধারণ মানুষের মতো জীবন-যাপন করেছেন।

এ সময় সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের সাথে দীর্ঘদিনের পরিচয় আর পেশাগত সম্পর্কের স্মৃতি তুলে ধরেন মো. আলম হোসেন খান। তিনি বলেন, তাকে স্মরণ করার চেয়ে তার আদর্শ অনুসরণ করাই আমাদের জন্য উত্তম কাজ হবে। তিনি ছিলেন সাদা মনের সহজ-সরল মানুষ। মানুষকে ভালবাসা আর মানুষের প্রতি সমব্যথী হওয়ার গুণ ছিলো তার মধ্যে। বিশেষ করে সাংবাদিকদের অধিকার-আন্দোলন লড়াইয়ে উনার বিকল্প ছিল না, আজও নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কাজী রফিকের সভাপতিত্বে ও ডিইউজে যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আকতার হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি মোরছালিন নোমানী, ডিইউজে সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, সিনিয়র সাংবাদিক জাকারিয়া কাজল ও স্বপন দাস গুপ্ত, বিএফইউজে কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, সাবেক সহ সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, পলিটিক্যাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আলম হোসেন, ডিইউজে সাবেক প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App