বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডাব্লিউ) বাংলাদেশে নারী পোশাক কর্মীদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পথ প্রশস্ত করতে একটি নতুন অংশীদারিত্বে প্রবেশ করেছে।

বিজিএমইএ ও এইউডাব্লিউ বাংলাদেশের পোশাক খাতে নারী শ্রমিকদের শিক্ষা, নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষমতা তৈরি ও তাদের ক্ষমতায়নের উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান করবে।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডাব্লিউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর ড. রুবানা হক ২২ জানুয়ারি ২০২৩ চট্টগ্রামের একটি হোটেলে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক এম. আহসানুল হক ও বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ইউডি-ওভেন অ্যান্ড নীট এর চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম। এইউডাব্লিউয়ের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন এইউডাব্লিউয়ের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমেদ, কলা ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. বীনা খুরানা, বোর্ড অব ট্রাস্টি সদস্য ক্যাথরিন ওয়াটার্স-সাসানুমা, এইউডাব্লিউ সাপোর্ট ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য ক্যাথি মাতসুই ও ছাত্রদের জন্য ভারপ্রাপ্ত ডিন সুমন চ্যাটার্জি।

এই সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো থেকে আরও অধিক সংখ্যক মহিলা শ্রমিকদের জন্য তাদের স্ব স্ব নিয়োগকর্তার সহযোগিতায় বিনামূল্যে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ তৈরি করে দেয়া।

সমঝোতা স্মারকের আওতায়, বিজিএমইএ ও এইউডাব্লিউ বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কর্মরত নারী কর্মীদের মধ্য থেকে ৫০০ জন যোগ্য নারী কর্মীকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর ৫ বছর মেয়াদি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রোগ্রাম ‘পাথওয়েজ ফর প্রমিজ’ এ তালিকাভূক্ত করার জন্য একসাথে কাজ করবে।

উল্লেখ্য যে, পোশাকখাত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মেয়েদের শিক্ষার জন্য এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর একটি বিশেষ উদ্যোগ, ‘পাথওয়েজ ফর প্রমিজ’ ও বিজিএমইএ বাংলাদেশি পোশাক কারখানাগুলোর কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে থেকে মেধাবী নারী শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দিবে।

ইতোমধ্যেই ৯০টিরও বেশি নারী পোশাক কর্মী এইউডব্লিউতে (এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন) অধ্যয়নরত রয়েছে। অধ্যয়নকালীন বছরগুলোতে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ এই নারী পোশাক কর্মীদের নিয়মিত বেতন দিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে তাদের পরিবারগুলো কোন সমস্যায় না পড়ে।

‘পাথওয়েজ ফর প্রমিজ’ কর্মসূচীর আওতায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, প্রত্যেক পাথওয়েজ স্কলারকে প্রোগ্রামে অংশগ্রহনকালীন পুরো সময় জুড়ে একটি আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রদান করে থাকে, যা দিয়ে রুম, বোর্ড, টিউশন, বইপত্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদার সমস্ত ব্যয় কভার করা যায়।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক শিল্প শুধুমাত্র যে সর্ববৃহৎ রপ্তানিখাত তা নয়। বরং শিল্পটি লাখো লাখো মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে, তাদের স্বপ্ন পূরণ করছে। পোশাক শিল্প কীভাবে নারী শ্রমিকদের স্বপ্নপূরণ করছে, কিভাবে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান দিয়ে পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে, তারই একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই ‘পাথওয়েজ ফর প্রমিজ’ কর্মসূচি।

তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আজকের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এবং বিজিএমইএ’র মধ্যকার অংশীদারিত্বকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি ও এক্ষেত্রে আমরা আরো বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবো।

শুধুমাত্র হাইস্কুল সম্পন্ন করা মহিলারা আবেদন করার জন্য যোগ্য ও নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। যারা সফলভাবে পাশ করতে পারেন, তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান।