×

জাতীয়

‘জন্মলগ্ন থেকে বিএনপি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম

বিএনপির জম্ম হয় স্বৈরতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিকভাবে। দলটি জন্মলগ্ন থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা দানব, অপশক্তি। তারা দেশে-বিদেশে চক্রান্ত চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র। অনেকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছেন, এমন দলের সঙ্গে কিসের ঐক্য এমন প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষনের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপিরা এমন মন্তব্য করে। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন।

বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু বলেন, বিএনপি এখন রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলছে। কিন্তু তারা স্বাধীনতা মানে না, সংবিধান মানে না, গণতন্ত্র মানে না, জাতির পিতাকে মানে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানান তিনি। শম্ভু বলেন, যারা সংবিধান মানে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি হওয়া উচিৎ। এই বিএনপি-জামায়াত মিলে গোলাম আজমের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তার পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল। তারা কখনো দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এই বিএনপি জামায়াত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। দেশে খুন, ধর্ষণ, জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করে দেশকে পিছিয়ে দেয়, পঙ্গু করে দেয়। তারা ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে। প্রধানমন্ত্রীর নামে বাজে কথা বলে, তারা দেশেবিদেশে ষড়যন্ত্র করে অগণতান্ত্রিকভাবে দেশ দখল করতে চায়, বিদেশের কাছে দেশকে পদানত করতে চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা আমেরিকা, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি ও স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা বীরের জাতি। মার্কিন জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল, তাদেরকে আমি সম্মান জানাই। আজ জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই, দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে লাইফটাইম প্রধানমন্ত্রী (আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী) হিসেবে দেখতে চায়।

তিনি আরো বলেন, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ তারা যদি আনবিক বোমা বানাতে পারে আমরা কেন পারবো না। আমাদেরও আনবিক বোমা বানাতে হবে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপি দলটিই আসলে দানব, তারা অপশক্তি। দলটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র , চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। তারা গণতন্ত্র বিকাশের প্রধান অন্তরায়। তারা উন্নয়নের শত্রু। এদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আনার জন্য কতিপয় বিদেশি দূতাবাস-দেশ আর এক শ্রেণির সুশীল সমাজ উঠে পড়ে লেগেছে। বিএনপি আসলেও ভালো, না আসলেও ভালো। তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদের জঙ্গিবাদী স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সৃষ্টি করে। বিএনপি দলটি একটি আসনের মনোনয়নের জন্য ৪-৫জনের কাছ থেকে অর্থ নেয়। তাদের তথাকথিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক লন্ডনে বসে একপ্রস্থ টাকা নিয়ে মনোনয়ন দেয়, আবার খালেদা জিয়া গুলশানে বসে আর একপ্রস্থ অর্থ নেয়, পার্টি অফিসে বসে ফখরুল সাহেবরা আরো কয়েকপ্রস্থ অর্থ নিয়ে এক আসনে চার-পাঁচজনকে মনোনয়ন দেন, এভাবে নেতাকর্মীদের ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে তারা। সে কারণে বিএনপিকে দেশের জনগণ ত্যাগ করেছে। জনগণ আজ তাদের পিছনে না থাকায় তারা ঘুর পথে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, বিগত ২০১৮ সালে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পর পর তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে। তার সুযোগ্য দেশ পরিচালনায় আমরা উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার জননী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। মানবতার নেতা, চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থসহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তারই নেতৃত্বে দেশ সমুদ্র বিজয় করেছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উক্ষেপণ করেছে, মিসাইল (ক্ষেপণাস্ত্র) নিক্ষেপে পারদর্শিতা দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল ও সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রভাবে বিশ্বব্যাপী যে মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে তা সত্তে¡ও বাংলাদেশে আজ তা সামলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে-হচ্ছেও। আজ আইএমএফের তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫ নম্বর অর্থনৈতিক দেশ। এসময় তিনি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

এমপি সিমিন হোসেন রিমি জেলে নিহত তার পিতাসহ চার নেতার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ মতো এই চার নেতা দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মবলি দিয়েছেন। আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের প্রতিটি দুরিদ্র মানুষ ভিজিডি-ভিজিএফসহ নানা ধরনের ভাতা পাচ্ছেন। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা-বিভিন্ন ভাতাও পান। দেশের মানুষ আজ সুখে আছে।

রাষ্ট্রপতির ভাষেনের ওপর আরো বক্তব্য রাখেন এমপি নাহিদ ইজাহার খান, এবিএম কবিরুল হক, আহসানুল ইসলাম টিটু, জিন্নাতুল বাকিরা, রুমানা আলী ও ফেরদৌস ইসলাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App