×

সারাদেশ

উলিপুরে গলাকেটে রফিকুল খুনের জট খুলছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:২১ পিএম

উলিপুরে গলাকেটে রফিকুল খুনের জট খুলছে

প্রতীকী ছবি

কিলিং মিশনের অপর একজন আটক, এর আগে একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ

উলিপুরে চাঞ্চল্যকর রফিকুল খুনের জট খুলতে শুরু করেছে। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালেই হত্যাকাণ্ডের শিকার রফিকুলের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী আলিফ উদ্দিনের ছেলে রফিকুলকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই কিলিং মিশনে জড়িত ফেরদৌস আলী নামে (তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা) অপর এক আসামিকে শুক্রবার রাতেই আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়েই স্বীকার করেছে, অর্থলোভের বশে কিলিং মিশনে জড়িত কয়েকজন মিলে রফিকুলকে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের শিকার রফিকুলের স্ত্রী লাইজু বেগম শুক্রবার রাতেই উলিপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উলিপুর থানা পুলিশের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কিলিং মিশনে জড়িত অন্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে।

উলিপুরে রফিকুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি ফেরদৌসের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি মোবাইল ফোনসহ সাত হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। আসামি ফেরদৌস কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। বিষয়টি উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে জেলার উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের (ফাগু) ছেলে অটোচালক রফিকুলকে গলাকেটে হত্যার পর মুন্সিবাড়ির অদূরে তেলিপাড়া গ্রামে মরদেহ রাস্তার পাশে একটি বাঁশঝাড়ে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা।

এরপর শুক্রবার ভোরে তেলিপাড়া গ্রামের কয়েকজন মসজিদে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ওই মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। তৎক্ষণাৎ খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে স্থানান্তর করে।

এদিকে, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কুড়িগ্রাম থেকে সিআইডির একটি চৌকস দল সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেন। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম ঐদিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনা দ্রুত উদঘাটনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের বিষয়ে অভিযান চলছে বলে জানান।

রফিকুলের স্ত্রী লাইজু বেগম বলেন, তার স্বামী রফিকুল (৩৫) প্রথম বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাতো। এতে দিনকাল ভালো না যাওয়ায় (পারিবারিক খরচ নির্বাহ না হওয়ায়) চায়ের দোকানে বেশ কিছুদিন মেসিয়ারির কাজ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে লোন নিয়ে (ঋণ) কিছুদিন আগে একটি অটোরিকশা ক্রয় করেন। সম্প্রতি সেটা বিক্রি করা হয়েছে। সেই অটো বিক্রির ৮০ হাজার টাকাসহ ঘটনার আগের দিন আশা এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা তোলা হয় (ঋণ নেয়া হয়)।

ঘটনার আগের দিন তোলা এই টাকাটা তার স্বামীর কাছে ছিলো বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া, লাইজু বেগম আরো বলেন, এই টাকার জন্যই তার স্বামীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্বামী খুন হওয়ার পর লাইজুর জীবনে এখন চরম অনিশ্চয়তা। অবুঝ দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে সেই চিন্তায় লাইজু এখন দিশেহারা।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে, এরই মধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। খুব দ্রুত সব হত্যাকারীকে আটক করে আইনের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App