×

সারাদেশ

তুমব্রু সীমান্তে টানা তিনদিনের গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৪ পিএম

তুমব্রু সীমান্তে টানা তিনদিনের গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে টানা তিনদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলিতে সীমান্ত বসবাসরত লোকজনের মাঝে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) ভোর থেকে থেমে থেমে সকাল ৮টা পর্যন্ত গোলাগুলি শব্দ শুনা গেছে বলে দাবি করছে এলাকাবাসী। তবে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে এড়িয়ে যাওয়াতে কোন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের গোলাগুলি গত বছর থেকে শুরু হয়েছে। তখন ঘটনা ঘটে ছিল মিয়ানমারের ভূখণ্ডে। এখন সীমান্তের গা ঘেঁষে জিরো পয়েন্টে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। তাও মিয়ানমারের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের মধ্যে। তবে খবর পাওয়া যাচ্ছে মিয়ানমারের ইয়াবা আর গরুর চোরাচালান নিয়ে চাঁদা আদায়ের আধিপত্য বিস্তারের এসব গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। আমার জানা তথ্যগুলি আমার উর্ধতনকর্মকর্তাদেরকে জানানোর চেষ্টা করি বলেও জানান তিনি।

জানাযায়, গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) থেকে মিয়ানমারের আরাকানের স্বাধীনতাকামী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন ও বিচ্ছিন্নবাদী আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি চলছিলো। এসব গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে আরও জানা যায়, বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলি চলছিল। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত আর দুইজন গুলিবিদ্ধের খবর পেলেও দায়িত্বশীল উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোন রকম বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে আহতদের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার দ্বিতীয় দিন ১৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার দিকে জিরো লাইনের রোহিঙ্গা শিবিরে মিয়ানমারের দুই রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে পর দুর্বৃত্তরা জিরো লাইনের বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ঝুপড়িগুলো পুড়িয়ে দেয়ার পর সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিলো। সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবির টহল বাড়ানো হয়। এছাড়া সেখানে র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছিল।

এদিকে চলমান ঘটনায় গত শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ফের গোলাগুলির শুনতে পায় সীমান্তের লোকজন। এ সময় গোলাগুলির শব্দে র্নিঘুমে রাত পার করে দেয় সীমান্তবাসীরা। রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন আর দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কে সাহস্রাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু স্কুল ও আশেপাশে আশ্রয় রয়েছে। এসব জায়গাতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে দ্রুতগতিতে দায়িত্বশীল কর্মকর্তরা এসব রোহিঙ্গাদের নতুন করে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়ার আশা করছে এলাকাবাসী। কারন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাহত পারে। স্থানীয়দের কথা মতে- জ্বলিয়ে দেওয়া আগুনে জিরো লাইনের রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৮৫শতাংশ ঝুপড়িঘরই পুড়ে গেছে বলে জানান।

উল্লেখ্য, বুধবার সকালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মিয়ানমারের দুই বিচ্ছিন্নতাবাধী রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষে হামিদ উল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও মোহিদ উল্লাহ এবং এক ১২ বছরের শিশু আহত হয়। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা শিবিরে আগুনে প্রায় ৮৫% শতাংশ ঝুপড়ি ঘর পুড়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App