×

সারাদেশ

কালুরঘাটে চালু হচ্ছে ফেরি সার্ভিস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১৮ এএম

কালুরঘাটে চালু হচ্ছে ফেরি সার্ভিস

ছবি: সংগৃহীত

চলছে এপ্রোচ সড়কের কাজ

চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেলওয়ে কাম সড়ক সেতু ‘কালুরঘাট সেতু’টি শত বছরের পুরনো ও জরাজীর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুতে প্রতিদিন শতশত যানবাহন চলাচল করছে। একমুখী সেতু হওয়ায় এ পাড় থেকে ওপাড় যেতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। মূলত যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ভারী যানবাহনের চলাচল এড়ানোর জন্যই সড়ক ও জনপথ বিভাগ নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য আনা হয়েছে তিনটি ফেরি। নির্মাণ করা হচ্ছে সেতুর উভয় পাশে সংযোগ সড়ক।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দুটি ফেরি চলবে। ফেরি দিয়ে ট্রাক লরি বাস চলাচল করবে, ছোট গাড়িগুলো সেতু ব্যবহার করবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, কালুরঘাটে ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য নদীর উভয় পাশে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তিনটি ফেরি চলে এসেছে। দুটি ফেরি নদীর দুইপাশ থেকে চলবে। একটি রিজার্ভ থাকবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরি সার্ভিস শুরু হবে।

ফেব্রুয়ারিতে ফেরি সার্ভিস চালু হলে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাশের যানজট স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন কালুরঘাট সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যান চলাচলে মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। ফেরি চলাচল শুরু হলে বড় গাড়িগুলো ফেরিতে যাবে। এছাড়া ছোট গাড়িও যাবে। তখন কালুরঘাট সেতুতে রেল ও ছোট গাড়ি চলাচল করবে বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

এদিকে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে গত বুধবার চট্টগ্রামে রেলওয়ের একটি অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন আগামী বছরের শুরুতেই কালুরঘাট সেতুর কাজ শুরু হবে বলে জানান। অন্যদিকে পুরনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট দেয়ার পর বুয়েটের রিপোর্টের উপর রেল কর্তৃপক্ষ সেতুটি মেরামতের উপযোগী করতে টেন্ডার আহ্বান করবে।

নতুনভাবে মেরামতের পর এই সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানো যাবে বলে জানান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকেল্পর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী। তিনি জানান, দোহাজারী-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার পথের মধ্যে ৬০ কিলোমিটারে রেললাইন বসে গেছে। ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে কক্সবাজার সাইটে কাজ এগিয়ে গেছে। প্রকল্পের বেশির ভাগ ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ শেষ হয়েছে। যেগুলো বাকি আছে সেগুলোও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। আমরা চেষ্টা করছি ২০২৩’র মধ্যে কাজ শেষ করতে।

প্রসঙ্গত, কালুরঘাট সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৩০ সালে। নানা ইতিহাসের সাক্ষী এবং উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামকে সংযুক্তকারী এ সেতুকে ২০০১ সালে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করা হয়। এরপরও সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল করছে ট্রেন থেকে শুরু করে সব ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন। এ সেতুতে ১০ টনের বেশি ভারি যানবাহন নিষিদ্ধ। তবে ট্রেন চলে ঘণ্টায় মাত্র ১০ মাইল বেগে। অবকাঠামো একবারেই নড়বড়ে। সেতুটির বিভিন্ন অংশের পাটাতনে অসংখ্য গর্ত হয়ে গেছে। গাছের কাঠামোও অনেক দুর্বল। জরাজীর্ণ এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে লাখো মানুষ। একমুখী হওয়ায় দীর্ঘ যানজটে আটকে অনেক সময় দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে সেতুতেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App