×

সম্পাদকীয়

শিল্প-বাণিজ্য খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম : মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা ভোক্তা পর্যায়েও

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২২ এএম

শিল্প-বাণিজ্য খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম : মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা ভোক্তা পর্যায়েও

বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সপ্তাহ না ঘুরতেই এবার বাড়ল গ্যাসের দাম। শিল্প-বাণিজ্য ও সারসহ সব খাতে গ্যাসের দাম বেড়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। সরকারের নির্বাহী আদেশে এই দাম বাড়ানো হলো। গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিতরণ খরচে সমন্বয় চেয়ে সম্প্রতি তিতাসসহ বিতরণ সংস্থাগুলো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বড় ধরনের ধাক্কা আসবে শিল্প খাত, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে ভোক্তা পর্যায়েও। এতে করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হবে সরকারকে। ফলে বেড়ে যাবে জীবনযাত্রার ব্যয়। এর চাপ পড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর। জানা গেছে, বিদ্যুৎ খাতে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৫ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিল্প খাতে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৬ টাকা। তবে আবাসিক, চা শিল্প ও সিএনজি খাতে গ্যাসের দাম আগের মতোই থাকছে। বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার দাম ৯৯০ টাকা এবং দুই চুলার দাম ১ হাজার ৮০ টাকা। অন্যদিকে সিএনজিতে প্রতি ঘনমিটারে ৪৩ টাকা এবং চা শিল্পের গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ১১ টাকা ৯৩ পয়সাই রয়েছে। সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার আগের দাম ১৬ টাকাই বহাল রাখা হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক বিশেষ জ্বালানি পরিস্থিতিতে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সব ধরনের জ্বালানির মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। জ্বালানি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয় যেমন- বিমা খরচ, ঝুঁকি ব্যয়, ব্যাংক সুদ, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকা দুর্বল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে জ্বালানি খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববাজারে এলএনজির আমদানি মূল্য অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছিল। সে কারণে গত বছরের জুলাই থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান উৎপাদন বা সরবরাহ সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্পসহ সব খাতে গ্যাস রেশনিং করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছে সরকার। গ্যাসের অপচয় বন্ধ করা, সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগ না নিয়ে স্রেফ দাম বাড়ানো কোনোভাবেই যৌক্তিক চিন্তা নয়। ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন না ঘটিয়ে শুধু দাম বাড়িয়ে লাভ-লোকসানের হিসাব মেলানোর প্রবণতা থেকে সরে আসা উচিত সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর। সরকারকে জনসাধারণের সার্বিক দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মনে করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App