×

সাহিত্য

পিঠার সুঘ্রাণে পৌষের সন্ধ্যা জমজমাট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৩৪ পিএম

পিঠার সুঘ্রাণে পৌষের সন্ধ্যা জমজমাট

ছবি: ভোরের কাগজ

পিঠার সুঘ্রাণে পৌষের সন্ধ্যা জমজমাট
পিঠার সুঘ্রাণে পৌষের সন্ধ্যা জমজমাট
পিঠার সুঘ্রাণে পৌষের সন্ধ্যা জমজমাট

জামাইপুলি, ঝালজামাই, পাটিসাপটা, পোয়া, মালপোয়া, পুলি, নকশি, ম্যারা, মই, দুধচিতই, গোলাপ পিঠা, ছিপ, খিরসাপুলি, ফুল, ঝাল, সন্দেশ, ঝিনুক, ক্ষীরকুলি, তিলপনির, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুর পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিফা, রসফুল পিঠা, সুন্দরী পাকান, সর ভাজা ফুলঝুরি পিঠাসহ প্রায় শত রকমের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে উৎসবের স্টলগুলো।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে বেলুন উড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ১০ দিনব্যাপী ‘ষোড়শ জাতীয় পিঠা উৎসব-১৪২৯’ এর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ ১৪২৯ এর আহবায়ক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, নৃত্যগুরু আমানুল হক, সঙ্গীতশিল্পী রফিকুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম।

জামাইপুলি কিংবা ঝালজামাইয়ের সঙ্গে এসব নামের কি সম্পর্ক জানা নেই। তবে এই নামগুলো পিঠার। আর এই পিঠাই আমাদের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যেরই উৎসব শুরু হয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। পিঠামোদী দর্শকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বাঙালির রসনা বিলাসের অন্যতম উপকরণ পিঠার স্বাদ নিতে প্রথম দিনই উৎসবে যোগ দেন অনেক মানুষ। একদিকে সাংস্কৃতিক মঞ্চ অন্যদিকে পিঠাঘর দিয়ে সাজানো হয়েছে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। পিঠা প্রেমীদের আনাগোনায় পৌষের সন্ধ্যা যেন জমে উঠেছে ভিন্নরকম মুখরতায়।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এই উৎসবের আয়োজন করেছে।

পিঠা উৎসব ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন উৎসব উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে এম খালিদ বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির আদি উৎসব। এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পিঠা উৎসবের কৃষ্টিকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে পিঠা উৎসব আয়োজন করেছি। আগামীতে জেলা পর্যায়ে পিঠা উৎসব করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তীতে আমরা উপজেলা পর্যায়েও পিঠা উৎসবকে ছড়িয়ে পড়ে চাই।

প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে। পিঠার পাশাপাশি উৎসবের মঞ্চে প্রতিদিন বিকালে থাকছে নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, কৌতুক, জাদু প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজকরা জানান, উৎসবে অংশ নিয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পিঠার পসরা সাজানো থাকবে প্রায় ৫০টি স্টলে।

এসব স্টলে নানা স্বাদের প্রায় ২০০ ধরনের পিঠার সমাহার রয়েছে। মূলত নাগরিক জীবনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা স্বাদের নানা নামের পিঠাকে পরিচিত করে তোলাই এ উৎসবের অন্যতম লক্ষ বলে জানান আয়োজকরা। উৎসবের সমাপনী দিনে পিঠার সেরা শিল্পীদের পুরস্কার দেয়া হবে।

উৎসবে ইস্কাটন থেকে তিন মেয়েকে নিয়ে আসা অধ্যাপক সৈয়দা বদরুন নেসা বলেন, পিঠা আমাদের দেশের ঐতিহ্য। একসময় গ্রামে শীত মৌসুমে নানা স্বাদের পিঠা খেয়েছি। কিন্তু শহরে বসবাসের ফলে সেই পিঠার স্বাদ আর নিতে পারছি না।

বিশেষ করে শহরের চলতি প্রজন্মের অনেকে পিঠার ঐতিহ্য সম্পর্কে খুব একটা জানছে না। কারণ, শহরে পিঠা তৈরি খুব কম লোকেই করেন। সেজন্য এই জাতীয় পিঠা উৎসব নাগরিকদের, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে।

২৮ জানুয়ারি শেষ হবে দশদিনের এই পিঠা উৎসব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App