×

সারাদেশ

মাধবপুরে সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের পায়তারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:০০ পিএম

মাধবপুরে সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের পায়তারা
মাধবপুরে সংখ্যালঘুর জায়গা দখলের পায়তারা

ছবি: ভোরের কাগজ

হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে পরিবারটির

হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌর সভায় সংখ্যালঘু এক ব্যাক্তির জায়গা দখল করার পায়তারা করছে প্রভাবশালীরা। ওই প্রভাবশালী লোকজনদের হুমকি-ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সংখ্যালঘু পরিবারটি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর পৌর শহরের গুমুটিয়া গ্রামের হীরা লাল রায়ের একটি জায়গা দখল করার জন্য দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা চালিয়ে যাচেছ মাধবপুর পৌরসভার পশ্চিম মাধবপুর গ্রামের মৃত হায়দর আলীর ছেলে আব্দুল আলী ও মৃত বাহার উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন। তখন হীরা লাল রায় বাদি হয়ে ২০১৭ সালে সহকারী জজ আদালত মাধবপুরে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতে স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে হীরা লাল রায়ের পক্ষে ডিগ্রী হয়।

পরবর্তীতে হীরা লাল রায় মারা গেলে উত্তরাধিকারী হিসাবে অজয় রায় স্বত্বজারি করার জন্য সহকারী জজ মাধবপুর মামলা করলে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে সরকারি লোকজন ২০২০ সালের ১৮ মার্চ সরজমিন জমিতে এসে লাল নিশান টানিয়ে অজয় রায় কে জায়গা বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু সালাউদ্দিন ,আলাউদ্দিন পুনরায় জায়গাটি দখলে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। অজয় রায় সম্প্রতি জমিতে সরিষা বীজ বপন করলে কচি কচি সরিষা চারা গাছ জন্মায়। গত রোববার রাতে প্রতিপক্ষের লোকজন সরিষা ক্ষেতে হাল চাষ করে জমি নষ্ট করে ফেলে।

অজয় রায় জানান, উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি এই জায়গার মালিক। আব্দুল আলী তাদের জমি বর্গা চাষবাদ করত। এর মধ্যে আব্দুল আলী ও তার লোকজন জমিটি দখল করতে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে আদালতে একটি মামলা করে। বিজ্ঞ আদালত তাদের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে সকল কাগজ অবৈধ বলে ঘোষণা করেন। আদালত তাকে জায়গা বুঝিয়ে দিয়ে গেলেও সালাউদ্দিন ও আলাউদ্দিন তা মানতে রাজি হচেছ না। তারা রাতের আঁধারে সরিষার জমিতে হাল চাষ করে জমির চারা গাছ গুলো নষ্ট করেছে।

অজয় রায়ের স্ত্রী পূর্নিমা রায় জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচেছ। তাদের ভয়ে এখন তারা আতঙ্ককে দিন কাটাচ্ছে।

অজয় রায়ের ছেলে জয় রায় জানান, সালাউদ্দিন , আলাউদ্দিন জোরপূর্বক তাদের জায়গা দখল করে নিতে চাইছে। তাদের জায়গা দিয়ে দেবার জন্য হুমকি-ধমকি দিচেছ। যে কোনো সময় তাদের ওপর হামলা করতে পাড়ে।

এ ব্যাপারে গুমুটিয়া গ্রামের আলমাছ খান টুটুল জানান, অজয় রায় জমিতে সরিষা বীজ ফেলেছিল। রাতে সরিষা জমিতে কে বা কারা হাল দিয়ে চারাগুলো নষ্ট করেছে।

হাফেজ মাওলানা এম জাকির রহমান কাদেরী জানান, একজন হিন্দু তিনিও আমাদের দেশের নাগরিক, হিন্দুর উপর জোর জবরদস্তি করা ,তার সম্পদ দখল করে নেওয়া সমিচিন মনে করি না। এটা কোন মুসলমানের কাজ হতে পাড়ে না। প্রশাসনের মাধ্যমে আইনের মাধ্যমে যার জমি তাকে ফেরত দেয়া উচিত।

এই বিষয় গুলো অস্বীকার করে সালাউদ্দিন জানান, তারা জায়গা ক্রয় করেছেন। এখন আদালতে আপিল করা হয়েছে। পূর্বে আদালত তাদের কাগজপত্র গুলো বাতিল করেছেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি জানান, আদালত কাগজপত্র গুলো বাতিল করেছে তাই পুনরায় যাচাই-বাছাই করার জন্য আপিল করা হয়েছে।

৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর লাল মিয়া জানান, আদালতের আদেশে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সরকারি লোকজন অজয়কে জায়গা বুজিয়ে দিয়েছিল। পরে কি হয়েছে তিনি জানেন না।

পৌর প্যানেল মেয়র মোবারক উল্লাহ জানান, গত ২ বছর আগে ডুলের আওয়াজ শুনে সেখানে গিয়ে দেখলাম কোর্টের আদেশে অজয় রায়কে জমিটি বুঝিয়ে দেয়া হয়। সেখানে নিশান লাগানো হয়, এলাকাবাসী সবাই জানে। আসলেই এটি অজয় বাবুর জমি।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি আদালতের বিষয় তাই এই বিষয়ে বলা সমিচিন হবে না। আর সংখ্যালঘু কাউকে হুমকি-ধমকি দিলে ওই ব্যাক্তি অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App