×

জাতীয়

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশিরা ‘ছোটাছুটি শুরু’ করেছে: বাবলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:০০ পিএম

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশিরা ‘ছোটাছুটি শুরু’ করেছে: বাবলা

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা

প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার কারণে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত আছে: সরকারি দলের এমপিরা

নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দুতাবাসের কর্মকর্তা আর প্রতিনিধিরা আমাদের দেশে ‘ছোটাছুটি শুরু’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। এসময় কোনো দেশের আদেশ মেনে বাংলাদেশের নির্বাচন হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, সংসদে সরকার দলীয় এমপিরা বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি পর্যুদস্ত হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে দেশের অর্থনীতি ঠিক আছে, মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের অলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব মন্তব্য করেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী।

জাতীয় পার্টির আবু হোসেন বাবলা বলেন, আগামী বছরের শুরুতেই আমাদের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দুতাবাসের কর্মকর্তা আর তথাকথিত কয়েকটি মোড়ল দেশের প্রতিনিধিরা আমাদের দেশে ‘ছোটাছুটি করা শুরু’ করে দিয়েছেন। তারা আমাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার শিখানোর বুলি ছুড়ছেন। কোনো দেশের পরামর্শ বা আদেশ মেনে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যাবস্থা পরিচালিত হতে পারে না। আমরা চাই, সাংবিধানিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। আর সে নির্বাচনে সকল দল অংশ নিক। জনগণ যে দলকে ভোট দেবে সে দল রাষ্ট্রক্ষতায় যাবে। এখানে বিদেশীদের নাক গলানোর কিছু নেই।

তিনি আরো বলেন, আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে অসাধু ব্যাবসায়ীরা পণ্যেও দাম আরেক দফা বাড়াবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে সরকারের উচিত ছিলো বিদুৎ খাতের দুর্নীতি, সিস্টেম লস, অনিয়ম বন্ধ করা। কিন্তু তা না করে বরাবরের মতো সরকার আবারো উল্টো পথে হাটলো। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। এছাড়া, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের কষ্ট আরো বেড়ে গেল। এমনিতেই নানা অজুহাতে পণ্যমূল্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচসহ সর্বত্র এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

সংসদে আবু হোসেন বাবলা বলেন, দূর্ভাগ্যজনক হলেও এখনো জাতি হিসেবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এক হতে পারি না। সরকারী দল বলে বেড়ায় দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আর কথিপয় বিরোধী পক্ষ চিৎকার করে বলে, দেশে গণতন্ত্রের বদলে স্বৈরতন্ত্র চলছে। সরকারী দল বলে, দেশের উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে চলেছে, আর কথিপয় বিরোধী পক্ষ বলে, উন্নয়নের নামে দেশে হরিলুট চলছে। সরকারী দলের চোখে দেশে কোনো সংকটই নেই, আর রাজপথের কয়েকটি বিরোধী দলের চোখে পুরো দেশটা সংকটে। যারা সরকারে থাকে তাদের চোখে বিরোধী দলের সকল কর্মসূচি হয় ধ্বংসাত্মক। আর বিরোধী দলের চোখে সরকারি দলের সকল কর্মকাণ্ড হয় জনস্বার্থ বিরোধী।

বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্য সেবার নামে রোগীর পকেট কাটছে, সেই কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার মান, বিভিন্ন টেস্ট সুলভ করা ও সিট বাড়ানোর আহ্বান জানান বাবলা। তিনি ডাক্তারদের ফি অিতিরিক্ত, তা কত হবে তা নির্ধারণ করার কথাও বলেন।

নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তার নৌ পরিবহন সেক্টরের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ৯৫ টি বিদেশগামী জাহাজ চলাচল করছে, কিছুদিনের মধ্যে ১০০টি জাহাজ চলাচল করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ১০ হাজার নৌপথ খনন করা হবে, এরই মধ্যে ছয় হাজার ৫০০ কিলোমিটার খনন করা শেষ। তিনি বলেন, দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু দেশে অনেকে এ উন্নয়ন চোখে দেখেন না, বলেন উন্নয়ন হচ্ছে কই? তারা দেশ সংস্কারের কথাও বলেন। আমরা এগুলো খুনী জিয়ার দলের কাছ থেকে শুনছি।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা খুনী জিয়ার দুশাসন দেখেছি। তারই ধারাবাহিকতায় এরশাদ, খালেদা জিয়াও দুশাসন অব্যাহত রেখেছিল। তিনি বলেন, এদেশের উন্নয়ন ব্যাহত করার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু সরকারের স্থিতিশীলতা আছে বলেই এত ষড়যন্ত্রের মধ্যে আমরা উন্নয়ন করতে পারছি।

এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক বলেন, দেশের মানুষকে ভাবতে হবে উন্নয়নের মহাসড়ক মানে শেখ হাসিনা, যার ফলশ্রুতি পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলসহ শত শত উন্নয়ন প্রকল্প। আর মির্জা ফখরুলদের দেখানো পথ মানে গুম খুনের পথ, এতিমের টাকা আত্মসাদের পথ হাওয়া ভবন বানিয়ে কমিশনের পথ.. মানুষ তাই আর মির্জা ফখরুলদের পথে হাটবে না। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথে আছে।

এমপি অপরাজিতা হক বলেন, শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা কোভিট মোকাবিলা করেছি। আর বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী যে মুদ্রাস্ফীতির ঢেউ তাও প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় তিনি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। তবে মির্জা ফখরুলরা তা চোখে দেখেন না, তিনি পাকিস্তানে ভালো ছিলেন, তাকে বিমানে করে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির এমপি সালমা বেগম শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার প্রশংসা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলে দেশে আজ উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি জামাত তা চোখে দেখে না। তারা উল্টো পথে হাটেন।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরো বক্তব্য রাখেন এমপি এনামুল হক, মো. আব্দুল মজিদ খান, একেএম ফজলুল হক, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, মোজাফফর হোসেন, নাদিরা ইয়াসমিন জলি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App