×

জাতীয়

লু’র ইতিবাচক বার্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪১ এএম

লু’র ইতিবাচক বার্তা

দিনপঞ্জির হিসেবে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুয়ের সফরসূচি ৩ দিন বলা হলেও ঢাকায় কার্যত তিনি ব্যস্ততম ২৫ ঘণ্টা কাটিয়েছেন। এই সময়ে অন্তত ৮টি বৈঠক সেরেছেন। পৃথকভাবে হওয়া সরকারের ৪ মন্ত্রী, সচিব, শ্রমিক প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রম আইন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বৈঠকের পর ডোনাল্ড লু এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে ইতিবাচক ভাব দেখা গেছে।

গতকাল রাত ২টায় বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে মার্কিন প্রভাবশালী এই রাজনীতিক ঢাকাকে কার্যত ইতিবাচক বার্তাই দিয়ে গেলেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তার এমন ইতিবাচক বার্তা পেয়ে সরকারের মন্ত্রীসহ বিভিন্নজনদের ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। তবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে ডোনাল্ড লু এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা কোনো পক্ষই খোলাসা করেনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের জোট কোয়াডে বাংলাদেশ আপাতত যুক্ত হচ্ছে না। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক জোটে (আইপিএস) সম্পৃক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য এটি একটি অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে।

তবে ডোনাল্ড লুয়ের সফরের আগেই ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক টুইট বার্তায় বলা হয়, তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করবেন। এই সফরে সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। সম্পর্কের জের ধরেই আগামী ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য লুয়ের পক্ষ থেকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল সকালে ডোনাল্ড লু প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক সেরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডোনাল্ড লুয়ের বক্তব্য থেকেই ইতিবাচক বার্তা বেরিয়ে আসে। যার প্রতিধ্বনি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও। প্রায় একই কথা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেনও, যিনি ডোনাল্ড লুয়ের সঙ্গে গতকাল দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজ সেরেছেন। তারা বলেছেন, ১০ বছর আগেও বাংলাদেশ সফর করে গেছেন ডোনাল্ড লু। ১০ বছর পর গত শনিবার রাতে বাংলাদেশে এসে, দেশটির উন্নয়ন দেখে তিনি বলেছেন, উন্নয়নে অনেক পাল্টে গেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, মনোমুগ্ধকর অতিথিপরায়ন মানুষের দেশে বন্ধুত্ব শক্তিশালী করতে এসেছি। আমি এখানে এসেছি, আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতে, যখন বিশ্ব শান্তি ও ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে। তিনি বলেন, আমরা খুব খোলামেলা আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের একটা কমিটমেন্ট আছে, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার। আমরা যখন সমস্যা দেখি, তখন কথা বলি, পরামর্শ দিই। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলি। আমরা আমাদের গুরত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই।

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমার সঙ্গে তার (লুয়ের) দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনা খুব কনস্ট্রাকটিভ (গঠনমূলক) হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের

পুরনো বন্ধু। গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আর আমরা আগামী ৫০ বছরে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করতে চাই। এটা নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। কীভাবে আমাদের এ সম্পর্ককে আরো অর্থবহ করা যায়, আরো ভালো করতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। মোটামুটি আমরা ঐক্যমতে আছি। আমরা ভবিষ্যতে ভালো দিনের অপেক্ষায় রয়েছি।

মোমেন বলেন, আমাদের যে যোগাযোগ, এটা খুব কাজের। এর ফলে আমাদের মধ্যে যদি কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে, সেগুলো আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারব। আর আমরা ভালো পরামর্শ পেলে অবশ্যই গ্রহণ করব। তার নমুনাও দেখিয়েছি। আমাদের কোথাও যদি দুর্বলতা থাকে আমরা সেটা নিয়ে কাজ করব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, ডোনাল্ড লুয়ের ঢাকা সফরের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন সরকারের একটি ভালো পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও তা কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দূর হবে।

দুদেশের সম্পর্ককে বহুমুখী ও বিস্তৃত হিসেবে অভিহিত করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ঢাকায় আসার পর থেকে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন এবং তার সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুস্পষ্ট ও খোলামেলা আলোচনা করেছি। বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিনিয়োগ, শ্রম অধিকার, নিষেধাজ্ঞা, মানবাধিকার, গণতন্ত্র থেকে উন্নয়নের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক জোটের বিষয়ে আমাদের কী মত, তা নিয়ে।

র‌্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে ‘অসামান্য উন্নতি’ দেখছে যুক্তরাষ্ট্র : গত বছর র‌্যাব ও এর কয়েকজন সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও এখন সংস্থাটি ভালো কাজ করছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড লু বলেছেন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে র‌্যাবে বিশাল অগ্রগতি হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড লু বলেন, র‌্যাব নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আপনারা যদি এই সপ্তাহের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি দেখে থাকেন, তারা মনে করছে, র‌্যাবের দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে অসামান্য উন্নতি হয়েছে। এটা খুবই ভালো কাজ হয়েছে। এটা প্রমাণ করছে, মানবাধিকার রক্ষা করেই সন্ত্রাস প্রতিরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো র‌্যাব করতে সক্ষম।

উল্লেখ্য, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর ৬ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান পুলিশ প্রধানও রয়েছেন। এরপর থেকেই সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে নানা চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশের সরকার। এর আগেই বাংলাদেশের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ডোনাল্ড লুয়ের সফরে আলোচনায় এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, র‌্যাবের কাজকর্মে যুক্তরাষ্ট্র খুব খুশি। আমরা তাদের বলেছি, র‌্যাব এদেশে সন্ত্রাস বন্ধ করেছে। একসময় এই দেশে জিহাদি সন্ত্রাসের ভয়ে- আমাদের একজন জাজ মারা গেল, বিদেশি একজন হাইকমিশনারের ওপর বোমা হামলা হলো, তিনি মারা যাননি, অন্য আরেকজন মারা গেল। শেখ হাসিনার সমাবেশে বোমাবাজি হয়েছে, গ্রেনেড হামলা হয়েছে, তাতে ২৪ জন মারা যায়, ৩৭০ জন গভীরভাবে আহত হয়। এখন সেই দিন নেই। এই র‌্যাব থাকায়, ইদানিং তারা এসব নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ২০১৭ সালের পর দেশে কোনো বড় ধরনের সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়নি। র‌্যাব খুব ভালো কাজ করেছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, চলমান সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন ডোনাল্ড লু। গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়ায় ডোনাল্ড লু ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার জটিল প্রক্রিয়া হলেও ভবিষ্যতে ‘ক্লিয়ার’ হবে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, র‌্যাব ইস্যুতে বাংলাদেশ সঠিক প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। এতেই মীমাংসা হবে।

জিএসপি নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি : যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, জিএসপি পুনর্বহালে কংগ্রেস যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তবে প্রথম তালিকায় বাংলাদেশ থাকবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে কোনো দেশই যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপির অধীনে বাজার সুবিধা পায় না। কোনো পরামর্শ আছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, আমরা আমেরিকান, সবসময়েই আমাদের অনেক পরামর্শ থাকে। এর একটি বিষয়ে আলোচনা করে আমরা খুশি, সেটা হলো শ্রম অধিকারের মতো ইস্যু। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি জনগণ এবং আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে। শ্রম অধিকার ইস্যুতে আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারব এবং আমি নিশ্চিত, এই বছর আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।

গঠনমূলক পরামর্শ নেবে বাংলাদেশ : যুক্তরাষ্ট্র যদি গঠনমূলক পরামর্শ দেয় তবে সেটি গ্রহণ করবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে যদি কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তবে আমরা আলোচনা করে সমাধান করব। যদি গঠনমূলক পরামর্শ আসে, আমরা অবশ্যই সেটি গ্রহণ করব। এর নমুনা আমরা দেখিয়েছি। আমাদের যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, সেটি আমরা দূর করব।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরাও অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। আমার দল আওয়ামী লীগ সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসেছে। ব্যালটের মাধ্যমে সরকারে এসেছে, বুলেটের মাধ্যমে নয়। আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।

ডোনাল্ড লু বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আমাদের মধ্যে সৎ আলোচনা হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। আমরা যদি কোনো সমস্যা দেখি, তখন আমরা বিষয়টি উত্থাপন করি এবং আমরা পরামর্শ দিতে পারি। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখায় বিশ্বাস করি এবং বাংলাদেশের মতো অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করি।

আইপিএস প্রসঙ্গ : ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক জোট (আইপিএস) নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক জোট নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, আইপিএস নিয়ে আমাদের চমৎকার আলোচনা হয়েছে। এটি কোনো ক্লাব নয়, বরং একটি কৌশল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, কোয়াড নিয়ে বাংলাদেশ আপাতত ভাবছে না। ইন্দো প্যাসিফিকেই বেশি নজর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App