×

জাতীয়

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চাইবে ঢাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:২৯ এএম

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চাইবে ঢাকা

ডোনাল্ড লু

‘জবরদস্তিমূলক কূটনীতিক’ আখ্যা ঘুচাতে চান ডোনাল্ড লু

জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন অগ্রাধিকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল শনিবার রাতে বাংলাদেশে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। তার সফরে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা ছাড়াও তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছে। সেগুলো হলো- র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, মার্কিন বাজারে জিএসপি সুবিধা বজায় রাখা এবং রোহিঙ্গা ইস্যু।

আজ দুপুরে লু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরে বিকালে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলিত হবেন। আজ রাতেই তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন বলে জানা গেছে। ডোনাল্ড লু এমন এক সময়ে বাংলাদেশ সফর করছেন- যখন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিভিন্ন দেশে নানা অঘটনের নেপথ্য কারিগর হিসেবে আলোচিত এই মার্কিন কূটনীতিকের সফর ঘিরেও শীতে জবুথবু ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে কানাঘুষা। প্রকাশ্য এজেন্ডার বাইরে বিশেষ কোনো মিশন নিয়ে ঢাকায় এসেছেন লু? এই আলোচনাও চলছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত হাওয়া কোন দিকে যায়- তা-ই দেখতে কূটনৈতিক মহলের কৌতুহলী অপেক্ষা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কিছুটা অস্বস্তি বিরাজ করছে- এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। লু দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। নানা কর্মকাণ্ডে দক্ষিণ এশিয়ায় তার ‘জবরদস্তিমূলক কূটনৈতিক’ পদ্ধতির প্রয়োগের উদাহরণ রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কাসহ এই অঞ্চলে একটি ‘জবরদস্তিমূলক কূটনীতি’ প্রয়োগ করে তিনি নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। তবে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের বর্তমান প্রবণতা বিবেচনায় তার সফরে অবশ্যই রাজনৈতিক অসন্তোষ নিরসন, রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ, বিনিয়োগ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রভাব পড়বে।

গত ৯ জানুয়ারি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ঠিকঠাক আছে। তার মতে, মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার কারণে র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তবে তারা এখন এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আলোচনা হবে কিনা এটা এখনই জানা যাবে না। তবে আমাদের একটা অনুরোধ থাকবে তাদের প্রতি- তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত। গতকাল শনিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, র‌্যাব যখন তৈরি হয় তখন আমেরিকা-যুক্তরাজ্যের পরামর্শেই তৈরি হয়। তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওই দেশগুলো র‌্যাবের ধারণা দেয়। তারাই তৎকালীন সরকারকে এর জন্য ইক্যুয়েপমেন্ট দেয়। তাদের কারণেই প্রাথমিকভাবে র‌্যাব চালু হয়। সময়ের সঙ্গে র‌্যাব এখন অনেক পরিপক্ব হয়েছে। দেশের জনগণ তাদের পারফরম্যান্সের জন্য তাদের চায়। আমেরিকা অন্য বুদ্ধিতে তাদের ওপর প্রেশার দিয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করব। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের কোনো অস্বস্তির বিষয় আছে কিনা এবং তা সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। আমরা বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেব।

বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অভিযোগের পর দক্ষিণ এশিয়ায় ‘ডোনাল্ড লু’ নামটি বেশ পরিচিতি পায়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খান সরাসরি ডোনাল্ড লুকে তার পতনের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেন। খান আরো অভিযোগ করেন, লু তাকে পতনের বিষয়ে হুমকি দিয়েছিলেন। এর আগে ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ কো-অপারেশন (এমসিসি) স্বাক্ষর করার জন্য নেপালকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এমসিসি এখন নেপালের জন্য তার প্রতিশ্রæতি পূরণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লু গত বছর নেপালও গিয়েছিলেন এবং বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনার হুমকি দিয়ে চুক্তিটি অনুমোদন করতে নেপালকে বাধ্য করেছিলেন। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটেও লু’র ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় অস্থিরতার মধ্যে রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্বহাল করার ক্ষেত্রে লুর ভূমিকা ছিল। তাই ইমরানের অভিযোগের পর দক্ষিণ এশিয়ায় ‘জবরদস্তিমূলক কূটনীতির’ প্রতীক হয়ে যান- ডোনাল্ড লু। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একই রকম না-ও হতে পারে বলে মনে করেন কূটনীতিকরা। কারণ ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তিনি এই অঞ্চলে শাসন ও শাসক পরিবর্তনের ‘কারিগর নন’। তিনি এটা প্রমাণের চেষ্টা করতে পারেন। তিনি এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

লু’র সফরসূচি অনুযায়ী আজ রবিবার সাড়ে ১১টা থেকে পৃথকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। একই দিনে তিনি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। পরে তিনি দূতাবাসের অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবেন। এসব বৈঠকে মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণতন্ত্র এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, গুম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, শ্রম অধিকারসহ আরো কয়েকটি এজেন্ডাকে গুরুত্ব দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, জিএসপি সুবিধা পুনরুদ্ধার, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু, রোহিঙ্গাসহ নানা বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই মার্কিন কর্মকর্তা গত ৩০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসেবে লুর এটি প্রথম ঢাকা সফর হলেও বাংলাদেশে এটি তার প্রথম সফর নয়। গত মার্চে তিনি পার্টনারশিপ ডায়ালগ উপলক্ষে আসা মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের সঙ্গে নীরবে বাংলাদেশ সফর করেন।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, তিনি আসছেন এটা খুবই খুশির কথা; তিনি এই এলাকায় বেশ নীতিনির্ধারক। তিনি আসছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাই। পারস্পরিক সমঝোতা ও আলোচনার ভিত্তিতে এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে, কার অধীনে হবে- প্রভৃতি বিষয়গুলো বাংলাদেশের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা বা যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণে কর্ণপাত করছে বলে মনে হয় না। কারণ, বাংলাদেশ এখন আগের অবস্থানে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা এখন অনেক কমে গেছে। বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশ একটি বিশাল বাজার। বাংলাদেশ এ অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে টার্গেট করবে না, কারণ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলেও বিশ্বাস করে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আমেরিকার প্রধান মিত্র। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক আরো জোরদার করার দিকে তার নজর দেয়া উচিত। সংশ্লিষ্টদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ উভয়েই প্রতি বছর তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করে। এর ফলে বোঝা যায়, আজকের বৈঠকগুলোতে তারা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে।

কূটনৈতিক ব্যস্ততার ধারাবাহিকতা : লুর সফরকে দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক ব্যস্ততার ধারাবাহিকতা হিসেবেও দেখা যেতে পারে বলে বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে। গত দুই বছর থেকে উভয় দেশই তাদের কূটনৈতিক ব্যস্ততা বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭টি মধ্য ও উচ্চ স্তরের দ্বিপক্ষীয় সফর হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে আইলিন লাউবাচারের সর্বশেষ সফর। ১৭টি সফরের মধ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৭টি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ১০টি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। এত বড় সংখ্যক সফরের পেছনে কারণ হলো সম্পর্ক স¤প্রসারিত হওয়া এবং স্বল্পমেয়াদি মতবিরোধের সমাধান করার সদিচ্ছা। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত গুরুত্বও এই গভীর সম্পৃক্ততার পেছনে রয়েছে। যার ইঙ্গিত দিয়ে গত শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক জোটে যোগ দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের খুব একটা আপত্তি নেই। ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনোমিক ফোরামে যোগদান করলে যদি আমাদের লাভ হয়, তাহলে আমরা যোগদান করব। তবে এটা কিন্তু খুব স্বচ্ছ নয়। কারণ এটায় যুক্ত হলে কী লাভ হবে সেটা কিন্তু উল্লেখ নেই। তাই আমরা এগুলো এখনো স্টাডি করছি। বাংলাদেশকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ‘শেখানোর কিছু নেই’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা আমাদের মজ্জাগত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আমাদের অন্তরে, সর্বক্ষেত্রে। গণতন্ত্র ও জাস্টিসের জন্য কারো সুপারিশ করার দরকার নেই। তবে কেউ যদি কোনো পরামর্শ দেয়, সেটা আমরা শুনব। যাচাই-বাছাই করব, সেটা আমাদের দেশের জন্য মঙ্গলজনক কিনা। যদি ভালো হয়, তবে সেটা গ্রহণ করব। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা তো আমাদের বন্ধু দেশ। দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আমাদের এখানে আসছেন। তার সঙ্গে আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশাপাশি অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা করব। তারা যদি কোনো কনস্ট্রাকটিভ সাজেশন দেয়, আমরা সেটি গ্রহণ করব। আমরা একটা ব্যালেন্সড ফরেন পলিসিতে বিশ্বাস করি।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এমন স¤প্রসারিত সম্পর্কের মধ্যেই উভয় পক্ষের মধ্যে অসন্তোষও দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অসন্তুষ্ট এবং বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে অসন্তুষ্ট। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞাও সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং বাংলাদেশ সেগুলো তুলে নিতে চাইছে। এ ধরনের রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়াও কিছু নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ও রয়েছে উভয় দেশের আলোচনার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে চায়; যেখানে বাংলাদেশ জিএসপি পুনর্বহাল করতে চায় এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। সবশেষে, যুক্তরাষ্ট্রও চায় বাংলাদেশ তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে যোগদান করুক।

ডোনাল্ড লু-এর সফর বাংলাদেশের জন্য বেশ কিছু প্রভাব নিয়ে আসবে মনে করেন স্থানীয় শীর্ষ কূটনীতিকরা। তারা বলেন, প্রথমত, এই সফর দ্বিপক্ষীয়ভাবে কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়াবে। যেহেতু লু এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক, এই বৈঠকটি উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দেবে এবং সবশেষে, এই সফরটি লুকে তার ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করার একটি ব্যক্তিগত সুযোগও দেবে। বিশেষ করে জোরপূর্বক পদ্ধতি ব্যবহার না করে পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করে নিজের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের জন্য এটি একটি সুযোগ হতে পারে। সবমিলিয়ে রুটিন সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ভালো লক্ষণ, কারণ সফরে মতবিরোধগুলো ভাগ করে নেয়ার সুযোগ দেয় এবং একসঙ্গে চলার সুযোগ শনাক্ত করতে সহায়তা করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App