নাইক্ষ্যংছড়িতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আটক ৩
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৩৮ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গরু ও মাদক চোরাচালানের মূলহোতা ও অর্ধডজন মামলার আসামি জহির উদ্দিনসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে বিজিবি ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মৌলভীরকাটা শাইড়িপাড়ার মাস্টারঘোনা এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করে।
রবিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি অফিসার ইনচার্জ টান্টু সাহা।
তিনি জানান, আটক জহির পুলিশের ওপর হামলারকারীর মূলহোতা। এছাড়া জহিরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, জহির উদ্দীন কম্বোনিয়া ও আশারতলী এলাকার জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি ফুলতলি, জামছড়ি, জারুলিয়াছড়ি, কম্বোনিয়া সীমান্ত ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বার্মিজ গরুর চোরাচালান নিয়ে আসে। গত বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ভোর রাতে চোরাইগরুর একটি চালান আটক করতে গিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অপারেশন টিমের ওপর জনপ্রিতিনিধিদের ইন্ধনে এবং জহির উদ্দীনের নেতৃত্বে নূর মুহাম্মদ, আবুল মনসুরসহ কিছু উশৃঙ্খল নারী-পুরুষ হামলা চালায়। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ।
গত ১৪ জানুয়ারি নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রেজাউল করিমের নির্দেশনায় ফুলতলী বিওপি ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার যৌথ অপারেশন দলের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে জহির উদ্দিনকে পাহাড়ি এলাকা থেকে আটক করে। এরআগে শনিবার সকালে বান্দরবান জেলা শহর থেকে নুর মোহাম্মদ ও আবুল মনসুরকে আটক করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টান্টু সাহার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল।
স্থানীয়রা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বার্মিজ গরু ও মাদক কারবারে পর্দার আড়ালে থেকে অবৈধ কারবার করে আসছে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, বান্দরবান সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত থাকায় মিয়ানমার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের বেশ কয়েকটি অরক্ষিত পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন শত শত গরু-মহিষ ও মাদকের চালান আসছিল। এতে পাচার চক্র গড়ে গত এক বছরে অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন অনেকে। এই চক্র এতটাই শক্তিশালী যে, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালাতেও পিছপা হয় না। তবে অবৈধ চোরাচালান প্রতিরোধ ও চোরাকারবারীদের খুঁজতে পুলিশ ও বিজিবি সীমান্তে অপারেশন জোরদার করেছে।