×

জাতীয়

গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে আ.লীগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম

গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে আ.লীগ

বুধবার দেশব্যাপী দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান। ছবি: ভোরের কাগজ

গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে আ.লীগ

বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ নির্বাসনে পাঠিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীতে দলটির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ ১০ দফা দাবি এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ারসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে এ গণঅবস্থান ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। নগরীর ভুবন মোহন পার্কে বেলা ১১টা থেকে প্রায় চারঘণ্টাব্যাপী গণঅবস্থান ও সমাবেশ চলে। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আওয়ামী লীগ যদি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হয়ে থাকে তাহলে স্বাধীনতার মূল গণতন্ত্রকে কেন তারা বিসর্জন দিয়েছে? আজকে কেন তারা ‘৭২-‘৭৫ এর বাকশালের মতো অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে? তারা তো নাকি গণতন্ত্রের প্রবক্তা, কথায় আর কাজে ফারাক কেন?

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আজকে ঢাকাসহ সারাদেশে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আমাদের বাধা দেওয়ার জন্য ঢাকায় চার জায়গায় সমাবেশ করেছে যাতে বিএনপির লোক নয়াপল্টনে যেতে না পারে। গত ২৪ ডিসেম্বর আমাদের কর্মসূচি দিয়েছিলাম, কিন্তু ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ছিল। আমরা সেই কাউন্সিলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে রাজধানীতে ২৪ তারিখের প্রোগ্রাম আমরা স্থগিত করেছিলাম। এটাই হলো আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির প্রভেদ।’

আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেটা বলে সেটা করে না, আর আওয়ামী লীগ যেটা করে সেটা বলে না। আওয়ামী লীগ বলে গণতন্ত্র কিন্তু করে স্বৈরতন্ত্র। আওয়ামী লীগ গুম, খুন করে, মামলা-হামলা দেয়, অত্যাচার-নির্যাতন করে, রাত তিনটায় আমাদের মহাসচিবকে-স্থায়ী কমিটির সদস্যকে উঠিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু বলে না।’

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সমন্বয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিনু।

গণঅবস্থান কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। নগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শ্রী বিশ্বনাথ সরকার যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আতঙ্কে-ভয়ে ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছে না আওয়ামী লীগ

আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে নীতি-আদর্শ সবকিছু ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটি আওয়ামী লীগই ধ্বংস করেছে। তাই কোনো অবস্থাতেই তারা ক্ষমতা ছাড়বে না। আওয়ামী লীগের কয়েক মাসের যে বক্তৃতা, তারা বলছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতেই হবে। আওয়ামী লীগকে কোনো অবস্থাতেই ক্ষমতা ছাড়া যাবে না। আওয়ামী লীগ বিদেশিদের কাছে গিয়ে মায়াকান্না করে বলেছে, তারা ক্ষমতা ছাড়তে পারবে না। তারা ক্ষমতা ছাড়লে বিএনপি নাকি ১০ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে মেরে ফেলবে। তাহলে আওয়ামী লীগ কি এতই খারাপ করেছে, এটা কি রাষ্ট্রদূতেরা জিজ্ঞাসা করেননি। আওয়ামী লীগ খুব ভয়ে আছে। এর জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী।

আওয়ামী লীগের কোনো উসকানিতে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার বারবার বলেছে, বিএনপি যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের রক্ষা নেই। ১০টি বিভাগীয় গণসমাবেশের একটিতেও কী শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়েছে, হয়নি। তাহলে আওয়ামী লীগ কেন শৃঙ্খলার কথা বলছে? এটা হচ্ছে উসকানিমূলক কথা। বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের উসকানিতে উত্তেজিত হবেন না। মানুষ কখন উসকানি দেয়, মানুষ যখন নিজে ভয় পায়, দুর্বল হয়ে পড়ে তখন উসকানি দেয়। আওয়ামী লীগের আচার-আচরণে ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগ ভয় পেয়ে গেছে। বিএনপিকে নয়, এ দেশের জনগণকে ভয় পেয়েছে। ভয় পেয়ে তারা আবোল-তাবোল বকছে।

জনগণই ক্ষমতার উৎস জানিয়ে মঈন খান বলেন, জনগণ ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে সংসদে পাঠায়। এর অর্থ এটা নয় যে জনগণ তাদের ক্ষমতা রাজনৈতিক দলকে দিয়ে দিয়েছে। জনগণ প্রতিনিধিত্ব দিয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এ সময় শেষে ক্ষমতা বারবার জনগণের কাছে ফিরে আসে। সেটা পরবর্তী ভোটের মাধ্যমে আবার প্রয়োগ করে। এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না নিলেও বুঝতে পারে। তাই তারা ভোটের অধিকার চায়।

এসময় ১৬ জানুয়ারি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান বিএনপির নেতা মঈন খান

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, তারা আইয়ুব খান ও এরশাদের মতো স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।

বিএনপির নেত্রী আসিফা আশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো কবিতা চলবে না। এখন চলবে আমি সেই দিন হব শান্ত, যেদিন বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে আওয়ামী লীগ থাকবে না।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App