×

সারাদেশ

কেউ আ.লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম

কেউ আ.লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না

রবিবার বেলা দেড়টার দিকে সাতক্ষীরার উপজেলার হেলাতলা মৌজার সরিষা মাঠে স্থানীয় মৌ-চাষী কবিরুল ইসলামের ফার্ম পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ছবি: ভোরের কাগজ

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। সুতরাং আন্দোলন করে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবেনা। তারা দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা চালাচ্ছে। মানুষকে পুড়িয়ে ও কুপিয়ে মেরেছে। খালেদা জিয়া বলেছিল,শেখ হাসিনা না পালানো পর্যন্ত আমি ঘরে ফিরে যাবনা। ১৫ সালে ৯০ দিন হরতাল করেও সরকার কে হটাতে পারেনি। বরং তিনিই মুখে কালি মেখে ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন।

রবিবার (৮ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে সাতক্ষীরার উপজেলার হেলাতলা মৌজার সরিষা মাঠে স্থানীয় মৌ-চাষী কবিরুল ইসলামের ফার্ম পরিদর্শন শেষে এক কৃষক সমাবেশে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি আরও বলেন, আমানউল্লাহ আমান বলেছিল, ১০ ডিসেম্বরের পরে খালেদা জিয়া দেশ চালাবে। অথচ কিছুই হয়নি। আর তারেক জিয়া চুরিসহ অন্যান্য অপকর্ম কওে লন্ডনে পালিয়ে আছে। সুতরাং আন্দোলন তারা করতে পারবেনা।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন- দুদক খুব শক্তিশালী একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সুতরাং বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফের বক্তব্য সঠিক নয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর বিদেশ থেকে ভোজ্য তেল আমদানি করতে সরকারের ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এদেশের মানুষ আগে সরিষার তেল খেত। কেউ পাম তেলও চিনত না। কেউ সরিষার তেল চিনত না। দেশের সরিষা দিয়েই তেলের চাহিদা মিটতো।

তিনি আরো বলেন, বিদেশ থেকে যদি তেল আমদানি করা না লাগতো, তাহলে ওই টাকা দিয়ে দেশের অনেক উন্নয়ন করা যেতো। কিন্তু আমাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় তেল আমদানির জন্য।আমাদের বিজ্ঞানীরা সরিষার নতুন যা আবিষ্কার করেছে। সেই জাতগুলো হলো বারি-১৪, বারি-১৮ এবং বিনা-৯। এই জাতগুলো চাষ করে কৃষক বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৭ মণ ফলন পাচ্ছে। আগে যে সরিষার চাষ হতো তার ফলন এক থেকে দেড় মণের বেশি না। সরিষা ছাড়াও আমাদের বিজ্ঞানীরা ধানের নতুন জাত আবিষ্কার করেছে। এই ধান রোপন করতে হয় শ্রাবণ ভাদ্র মাসে। নতুন এই ধানের জীবনকাল ১১০ থেকে ১১৫ দিন। সরিষা চাষ করতে সময় লাগে ৮০ দিন। এই ৮০ দিনে বোরোর আবাদও কম হবে না আবার আমনের আবাদও কম হবে না। আমন ও বোরোর মাঝামাঝি সরিষা একটি অতিরিক্ত ফসল। অতিরিক্ত মুনাফা। সরিষা চাষ করে একজন চাষি বিঘা প্রতি চল্লিশ থেকে ৪৫ হাজার টাকা মুনাফা পেতে পারে।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সরিষা চাষের এই সম্ভাবনাকে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা আগামী বছরের মধ্যে ভোজ্য তেল বাবদ আমদানি ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে দশ হাজার কোটিতে আনবো। এজন্য আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। সরিষা আবাদ করে আমরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বিদেশি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনবো। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি। এটা আমরা বাস্তবায়ন করছি।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও অনুশাসনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।আমরা কৃষকদের ব্যাপকভাবে প্রণোদনা দিচ্ছি। আমরা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যের সার দিচ্ছি, বীজ দিচ্ছি ও কৃষি উপকরণ দিচ্ছি। সরিষা চাষের মাধ্যমে তেল উৎপাদনে আমরা বিপ্লব ঘটাবো।

সরকারের নানামুখী উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনা কালীন পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা দেশের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করেছি এবং সবজির আবাদ বৃদ্ধি করেছি।

সরিষা মাঠের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরিষার মাঠ দেখলে মনে হয় আদিগন্ত হলুদ রঙের চাদর বিছানো। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। হলুদ রঙা মাঠে সিনেমার শুটিং করতে মন চায়। বাংলাদেশের কৃষকরা যাতে উন্নত জীবন পায় সেজন্য বর্তমান সরকার সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা তেল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হব। এ দেশকে আমরা ফলে ফুলে ভরে তুলবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সজিব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আরিফ আদনান, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস, পৌর মেয়র মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল।

এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের নেতা সরদার মুজিব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সহ-সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান সম মোরশেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি কাজী আসাদুজ্জামান শাহাজাদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App