সিংগাাইরে নাগর আলী হত্যা মামলার মূল আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
টানা ১৬ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন সৌদি আরব। শুধু ছুটিতেই কয়েক বছর পর পর দেশে আসতেন ৩ সন্তানের জনক নাগর আলী (৫০)। এবার ৩ মাস আগে দেশে ফিরেই জমি সংক্রান্ত বিরোধের বলি হলেন তিনি।
নিহতের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামে। তার খুন হওয়ার পর কেটে গেল ১০ দিন। মূল আসামিরা এখানো রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশ বলছে, মামলার এজাহারভূক্ত বেগম নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করেছেন তারা ।
নিহতের পরিবারের দাবি, গত দুই বছর ধরে প্রতিবেশীদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধ মীসাংসার জন্য পুলিশের মধ্যস্থায় থানায় একাধিকবার সালিশ-দরবার হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। গত ২৩ ডিসেম্বর সকাল ৮ টার দিকে বিরোধপূর্ণ ওই জায়গায় খড়ের পালা দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী মৃত দুখাই পালের ছেলে মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে প্রবাস ফেরত কালু মিয়ার ছেলে নাগর আলী ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালায়।
এতে মারাত্নক আহত হন একই পরিবারের ৪ সদস্য। ভর্তি করা হয় বিভিন্ন হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থার উন্নতি হলেও গত ২৯ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে মারা যান নাগর আলী।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাবর আলী বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই এজাহারভু্ক্ত বেগম নামের এক নারী আসামিকে গ্রেফতার করলেও মূল আসামিরা এখানো রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
নিহতের পরিবার জানিয়েছে, ঘটনার দুই দিন পর তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ তাদের মামলা রেকর্ড করতে বিলম্ব করেছেন। যে কারণে আসামিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার নিয়েও শংকিত পরিবারটি।
সিংগাইর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার আদিত্য নিহতের পরিবারের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই মামলা নিয়ে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নেয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার গাফিলতি করা হয়নি। বরং আসামিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হলেও সেটা রেকর্ড করা হয়নি।
মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই বাবর আলী অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় আব্দুল মুন্নাফ মেম্বারের বোনের জামাই লুৎফর রহমান ও তার পরিবার মামলার আসামি হওয়ায় তার শেল্টার পাচ্ছে খুনিরা। যে কারণে এলাকা ছেড়ে গরু-বাছুর বিক্রি করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে আসামিরা।
সায়েস্তা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মুন্নাফ বলেন, আমার বোনের জামাই আসামি হওয়ায় আমাকে দোষারোপ করবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আমি আসামিদের শেল্টার দেয়াতো দূরের কথা তাদের সাথে আমার কোনো রকম যোগাযোগ নেই। থানা পুলিশ তার মোবাইল ফোন ট্যাকিং করে নজরদারিতে রেখেছেন বলেও তিনি জানান।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই লিবাস চক্রবর্তী বলেন, আসামি গ্রেফতারে দিন-রাত অভিযান চলছে। আশা করি দু’একদিনের মধ্যেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, আসামি গ্রেফাতারে কঠিন অভিযান অব্যাহত আছে। যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই হবে।