×

সম্পাদকীয়

রংপুরে ১৫ শিশুর মৃত্যু : আসুন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৪২ এএম

রংপুরে ১৫ শিশুর মৃত্যু : আসুন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই

মাঘ মাস শুরু হতে আরো প্রায় এক সপ্তাহ বাকি। গ্রামীণ জনপদে আক্ষরিক অর্থে মাঘ আসে শীতের দাপট নিয়ে। কিন্তু এবার পৌষ মাসের মাঝামাঝিতে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীত জেঁকে বসেছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড়কাঁপুনি শীতে বিশেষ করে গরিব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি-হাঁচি-জ্বর, হুপিংকাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। রংপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্ব^াসকষ্ট, জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্য থেকে এক সপ্তাহে ১৫ শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। যা সপ্তাহে স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে দ্বিগুণ। এদের বয়স এক মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে। জানা গেছে, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার সিলেটের শ্রীমঙ্গলে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তিন দিন ধরেই সিলেট অঞ্চলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রয়েছে। এই অঞ্চলসহ আরো কিছু জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ধীরে ধীরে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের দিকে এগোচ্ছে দেশ। শীত মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতি খুব সামান্য। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। খবরে প্রকাশ- রংপুর, কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহে গরম কাপড়ের অভাবে শীতের কষ্টে ভুগছে শিশু, বৃদ্ধসহ নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় ৪ শতাধিক চরের মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছে। শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার বিস্তার ঘটছে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও। পার্বত্য জেলাগুলোসহ সিলেট বিভাগেও অনুভূত হচ্ছে শীতের তাণ্ডব। দেশব্যাপী বয়ে যাওয়া তীব্র শৈত্যপ্রবাহের বিস্তার ঘটেছে রাজধানীতেও। দেশে শীতে যে কোনো দুর্যোগ-দৈবপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর দরকার এখনই। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্রসহ কম্বল বিতরণের খবর অবশ্য আসছে গণমাধ্যমে। তবে তা যথেষ্ট নয়, এ ধরনের তৎপরতা আরো বিস্তৃত হওয়া উচিত। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের এখনো তেমন সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে না, দু-চারজন ব্যতিক্রম ছাড়া। হতদরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র সরবরাহ সরকারের সামর্থ্যরে বাইরে নয়, তবে দরকার সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন। দেশে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাও পারে শীতার্ত দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ওষুধ কোম্পানিগুলো ও চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোও বিভিন্ন স্থানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে বাড়িয়ে দিতে পারে সহযোগিতার হাত। বিত্তবানদের যৎসামান্য ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে শীতার্ত মানুষের হৃদয়ে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিতে। আসুন আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App