×

জাতীয়

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৭ এএম

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র শীতে জবুথবু জনজীবন

ছবি: সংগৃহীত

পৌষের শেষদিকে এসে দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে শীত। উত্তরের কনকনে বাতাসের সঙ্গে সারাদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গত দুই-তিন দিন ধরে দেখা নেই সূর্যের। ঘন কুয়াশায় পথ চলতে বিপাকে পড়ছেন পরিবহন চালকরা। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে জবুথবু জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে শরীরে উষ্ণতার পরশ নিচ্ছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। তবে আগামী তিন দিনে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে আশার বাণী শুনিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়- কনকনে শীতে গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় বিপণিবিতানে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় লক্ষ করা গেছে। লেপতোশকের দোকানে কর্মচারীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। তীব্র শীতে বেশি দুরবস্থায় পড়েছে হতদরিদ্ররা। ছিন্নমূল মানুষদের ফুটপাতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতেও দেখা যায়। শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের অবস্থা বেশি খারাপ। শীতজনিত নানা রোগব্যাধি বেড়ে গেছে। মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে এ সংক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় গত এক সপ্তাহ যাবত দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছে না। তীব্র ঠাণ্ডা, ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে কনকনে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সেখানকার জনজীবন। এতে যানচলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। বিঘœ ঘটছে নৌ চলাচলেও। হাড় কাঁপানো শীতের কষ্ট থেকে বাঁচার জন্য গরীব মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। কুয়াশার চাদরে সারাদিন সূর্য ঢাকা থাকায় ঘর থেকে বেরিয়ে কাজের সন্ধানে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে- রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকার তাপমাত্রাও শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি। রাজধানীতে গতকাল সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত বুধবার ছিল ১৪ দশমিক শূন্য নয় ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৮ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আজ (গতকাল) কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। তবে দিনের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকার পাশাপাশি উত্তরী হাওয়ায় রাজধানীসহ অনেক এলাকায় কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। আরো কয়েকদিন এমন আবহাওয়া থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েক জায়গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। শীতের তীব্রতার কারণ ব্যাখ্যা করে ওমর ফারুক বলেন, কুয়াশার চাদরে সূর্যের দেখা না মেলায় দিনভর তাপমাত্রা কম থাকে। এতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও কমে আসে। এ সময় হালকা বাতাস থাকায় রাতের চেয়ে দিনে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে- মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এই ধারা দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাসের কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। আগামী তিন দিনে দেশের আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App