×

সারাদেশ

আলীকদমে ব্যাটালিয়ন ৫৭ বিজিবির সংবাদ সম্মেলন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৫৭ পিএম

আলীকদমে ব্যাটালিয়ন ৫৭ বিজিবির সংবাদ সম্মেলন

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের মাঝে প্রেস ব্রিফিং দেন। ছবি : ভোরের কাগজ

আলীকদমে ব্যাটালিয়ন ৫৭ বিজিবির সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের মাঝে প্রেস ব্রিফিং দেন।

এতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার রিজিয়ন দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সম্পূর্ণ সীমান্তের দায়িত্ব পালন করছে। এই সীমান্তের মধ্যে বান্দরবান সেক্টরের ৩টি ইউনিটের মধ্যে আলীকদম ব্যাটালিয়ন (৫৭ বিজিবি) বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ব্যাটালিয়ন সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান নির্মূলের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইন- শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে আসছে। সম্প্রতি আলীকদম উপজেলার মধ্য দিয়ে মায়ানমার থেকে গবাদি পশু, গরু চোরাচালান বেড়ে গেছে। পাহাড়ী ঝিরি পথ ও নদী পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে গবাদীপশু নিয়ে এসে লামা-ঈদগাসহ বিভিন্ন গরু নিয়ে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয় অন্যান্য মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার করে আসছে এবং ইতিমধ্যে দুইজন গ্রেপ্তার হয়েছে। চোরাচালান নির্মূলে ব্যাটালিয়ন নিয়মিত টাস্কফোর্স ও যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অভিযানে বিগত ৬ মাসে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা মূল্যের ৮০৭টি গরু-মহিষ আটক করা হয়েছে। এর থেকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত তিন কোটি টাকার অবৈধ কাঠ জব্দ করেছে। গরু আটকের বিষয়ে এই পর্যন্ত ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২টি মামলা থানায় এবং ২৪টি কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মামলা করা হয়। ইতিমধ্যে আমরা ২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করেছি। মূলত আলীকদম উপজেলার দূর্গম সীমান্ত এলাকা হয়ে পোয়ামুহুরী ও করুকপাতা এলাকার বিভিন্ন ঝিরি দিয়ে চোরাকারবারী নিয়ে আসতেছে। চোরাচালান শুধু অত্র এলাকার ভারসাম্য নষ্ট নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে একদিকে যেমন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেই সাথে দেশীয় কর মুখে। চোরাচালানের এই গরুগুলো অধিকাংশ ক্ষুরা রোগসহ বিভিন্ন রোগ যার ফলে দেশীয় খামারসহ অন্যান্য গবাদি পশুতে তা ছড়িয়ে পড়ছে।

ওই এলাকা দিয়ে গবাদিপশুর পাশাপাশি মাদক চোরাচালানের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। এক্ষেত্রে আমি স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে মাদক শুধু নিজেকে ধ্বংস করে না পুরো পরিবার তথা সমাজ ও দেশকে ধ্বংস করে দেয়। দেশ ও সমাজকে রক্ষায় চোরাচালানী রোধে আমাদের সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। বিজিবির এই আভিযানিক ও অপারেশনাল কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য কিছু চোরাকারবারী ও দুস্কৃতিকারী বিজিবির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ৫টি মামলা দায়ের করেছে।

ওই মামলাগুলো বিজিবি আইনগত ভাবে মোকাবেলা করছে, ইতিমধ্যে আদালত মামলায় বিজিবির পক্ষে রায় দিয়েছে এবং কয়েকটি মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা সীমান্তে জনগণের আস্থা রেখে বিজিবিকে দায়িত্ব পালন হবে। এই প্রত্যাশা বাস্তবায়নের লক্ষে দুস্থ ও অসহায় জনসাধারণকে খাদ্য, বস্ত্র বিতরণ এবং চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে সহযোগিতা প্রদান করে আসছে বিজিবি। এই প্রচেষ্টায় অন্যান্য প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ দেশের জনসাধারণ বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

পরিশেষে বিজিবির আভিযানিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিজিবি অধিনায়ক কর্নেল মো. শহীদুল ইসলাম পিএসসি।

কারা বিজিবি ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে বিজিবি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, ইতোমধ্যে বিজিবির বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করেছে চোরাচালানী সিন্ডিকেট। বিজিবি এসব মামলা আইনগতভাবে মোকাবেলা করছে। কয়েকটি মামলার রায় বিজিবির পক্ষে এসেছে। আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করছি। সকলে মিলে এ ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে চোরাচালান নির্মূল করার আহ্বান জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App