×

জাতীয়

গণতন্ত্র উদ্ধার হলে বাংলাদেশ মুক্ত হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:১২ পিএম

গণতন্ত্র উদ্ধার হলে বাংলাদেশ মুক্ত হবে

মঙ্গলবার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি: ভোরের কাগজ

গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারলে, বাংলাদেশ মুক্ত হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা মুক্ত হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো আমরা।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও মির্জা আব্বাসসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে ঢাকাস্থ ঠাকুরগাঁও জাতীয়তাবাদী ফোরাম।

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ গণতন্ত্র চান। জনগণ তাদের ভোট নিরাপদে দিতে চায়। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারলে, বাংলাদেশ মুক্ত হবে। মানুষ ভোট দিতে পারবে। আজকে আদালত, সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসব কিছু শেখ হাসিনার কথায় চলে। সকালে শেখ হাসিনা যা বলেন দুপুরে আদালত তাই করেন। ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদরা টেলিভিশনে যা বলেন আদালতে সেই মোতাবেকই রায় হয়। এসব দেখেই বুঝা যায় আদালত স্বাধীন নয়। স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়ও না। সেই কারণে আমাদের আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। ফ্যাসিবাদ সরকার কখনো নিরস্ত্র জনগণের সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকতে পারবে না। আগেও পারেনি। শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নেতাদের মুক্তি কার কাছে চাইবো। তিনি আমাদের দলের শীর্ষনেতাদেরকে ধরেছেন, তিনি তো ছাড়বেন না। আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একবার বলেছিলেন, ‘বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে হাসিনা ধরলে কাউকে ছাড়ে না’। তাই এই সরকারের কাছে মুক্তি চেয়ে লাভ নেই।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার সমাবেশ নিয়ে সরকার অমানবিক কর্মকান্ড ঘটিয়েছে। আমাদের নেতা ডা. জাহিদের কাছে সমাবেশ করার অনুমতিপত্র দিয়ে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। নানা নাটকীয়তার পরে জেলখানায় পাঠায়। তাদেরকে ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে সংর্ঘষের ঘটনায় উস্কানিদাতা হিসেবে জেলে পাঠানো হয়েছে। অথচ মামলার এজাহারে তাদের নাম নেই। তারপরও নিম্ন আদালতে তাদের জামিন মেলেনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমার আদালতকে একটি কথাই বলতে চাই, আমরা ন্যায় বিচার চাই। অন্যায়ভাবে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে, তাদের নিয়ে আমরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার চাই। আমরা করুণা চাই না। এতো দিন ন্যায় বিচার পাইনি।

খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার পায়নি উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের নেত্রী ন্যায় বিচার চেয়েছিলো। তার ওপর ন্যায়বিচার করা হয়নি। অবিচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে খালেদা জিয়া ব্যতিত এমন কোন নজির নেই যে, এ সংক্রান্ত মামলা কেউ জামিন পায়নি।

তিনি বলেন, আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। বিচার বিভাগ যদি আলাদা হতো, বিচারপতিরা যদি বলতে পারতো যে তারা স্বাধীন। তাহলে ন্যায়বিচার পেতাম। কিন্তু এখন আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আর আমাদের নেতাদের মুক্তি চাইবো না, এখন তাদেরকে মুক্ত করবো। আমরা গণতন্ত্র, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ সব নেতাকর্মীদের আমার মুক্ত করবো।

তিনি বলেন, আমার চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের বাধা শেখ হাসিনা। যতক্ষণ তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, ততক্ষণে পুলিশ, র‌্যাব, আদালত, প্রশাসন বাধা থাকবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে, পুলিশ জনগণের পক্ষে কাজ করবে। পুলিশ আর কখনো জনগণের উপর অত্যাচার করবে না। জনগণের খাদেম হিসেবে কাজ করবে। এই কারণে আমরা বলছি, আগামী সুষ্ঠু নির্বাচনের একমাত্র পথ হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকার পদত্যাগ করলেই খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ সব কারাবন্দির মুক্তি মিলবে।

সংগঠনের সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ নেওয়াজ, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, শফিকুল ইসলাম বাবুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ওমর ফারুক সাফিন, কামাল আনোয়ার আহম্মেদ প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App