×

সারাদেশ

অ্যালকোহলের বিষক্রিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:১০ পিএম

অ্যালকোহলের বিষক্রিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু!

ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিব। ছবি: ভোরের কাগজ

ফরিদপুরে অ্যালকোহলের অতিরিক্ত বিষক্রিয়ায় রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাকিব (২৭) নামে এক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর এসেছে। রাকিব ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি। তার বাবা জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বেলজানি গ্রামের শরিফুল ইসলাম মাতব্বর। ফরিদপুর পলিটেকনিক কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতো রাকিব। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে রাকিব সবার ছোট ছিল।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুর দুইটা ২০ মিনিটের দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

এদিকে, অ্যালকোহলের অতিরিক্ত বিষক্রিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুর বিষয়ে বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি না দিলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সোমবার রাতে শোক প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফের যৌথ স্বাক্ষরিত ওই শোক বার্তায় দাবি করা হয়, ‘ছাত্রলীগের ফরিদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে ছাত্রলীগ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। রাকিবুল ইসলামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে ছাত্রলীগ।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের এ শোক বার্তার পর বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর শহরে আলোচনা সৃষ্টি হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাকিবকে সোমবার সকাল নয়টা ১০ মিনিটে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বন্ধু পরিচয়ে আবির নামে এক তরুণ এসে ভর্তি করায়। ভর্তির জায়গায় ‘পুলিশ কেস’ সিল মারা ছিল।

ভর্তি করতে এসে আবির জানায়, বমির প্রবণতা থাকায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এক নারী জানায়, ভর্তি হওয়ার সময় আরিফকে রাকিবুল বলেছিল, ‘মদের সঙ্গে কি খাওয়ালি আমার বুক ও গলা জ্বলে যাচ্ছে।’

এরপর আবিরের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে আবিরের যে মুঠোফোন নম্বরটি দেওয়া হয় তাতে ফোন করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। মেডিকেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বমির কথা বলে রাকিবুলকে ভর্তি করা হলেও তার সমস্যা ছিল অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়া। তাকে দ্রত আইসিতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দুইটা ২০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

রাকিবুল ইসলামের চাচাতো ভাই ও স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মাতুব্বর বলেন, ‘ইংরেজি নতুন বছরের রাতে বন্ধুদের সঙ্গে মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে রাকিব। একপর্যায়ে বমি করায় তার বন্ধুরা হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সে মারা যায়। খবর পেয়ে আমরা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসি। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থানীয় বেলজানী-খরসুতী মাদরাসা সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।’

ওই হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, এটি একটি পুলিশ কেস। এ জন্য রাকিবুলের মৃত্যুর পর যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহরিয়ার বলেন, এই মৃত্যু সংক্রান্ত ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় কোনো তথ্য নেই।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানজীদুল রশিদ ওরফে রিয়ান জানান, রাকিবুল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। অ্যালকোহলজনিত মৃত্যুর ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App