×

সম্পাদকীয়

শীতজনিত রোগ বাড়ছে : বাড়তি সতর্কতা দরকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২২ এএম

শিশুদের শীতজনিত রোগ বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে সর্দি-জ¦র, কাশি ও নিউমোনিয়া। শিশু বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঠাণ্ডা থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিলে সুরক্ষিত থাকবে তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ধরে গতকাল ভোরের কাগজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ নভেম্বর থেকে গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এআরআই বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও ডায়রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের, বাকি ২১ জন এআরআইতে মারা গেছেন। এতে স্পষ্ট হয়, ধীরে ধীরে শীতকালীন রোগের প্রকোপ বাড়ছে, যা অত্যন্ত আতঙ্কের। রাজধানীসহ জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোতে দিন দিন এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্য বয়সিদের তুলনায় বেশি বিপদে পড়তে হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে এখন সকাল-বিকালে হালকা শীতল বাতাসে শিশু রোগাক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুর রেসপেরিট্র্যাক ইনফেকশন, ব্রংকিউলাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, শীতকালীন ডায়রিয়া ও রাইনো ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগী বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় এ রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য ঠাণ্ডা অনুসারে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠাণ্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি। যেসব বাচ্চা স্কুলে যায়, তাদের মধ্যে অ্যাজমার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে বেশি। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকরা তাদের শিশু সন্তানদের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখবেন। সেই সঙ্গে ধুলাবালি থেকেও যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে শিশুদের যতটা সম্ভব কম ঘর থেকে বের করতে হবে। ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা বাতাস যেন না ঢোকে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে ঘরের মধ্যে রুম হিটার ব্যবহার করতে হবে। শীত এলে শীতজনিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হবে, এটাই স্বাভাবিক। কাজেই এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্কতা প্রচার করতে হবে। শিশুদের ব্যাপারে অভিভাবকদের অধিকতর সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর ৯৩ লাখ ৫০ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। আর দিনে গড়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ শিশুর মৃত্যু হয়। নিউমোনিয়ায় ঝুঁকিতে থাকা দেশের মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে ৫৪ শতাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও বাংলাদেশে এই সংখ্যা ৩৭ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় লাখ মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে পাঁচ বছর বয়সের আগে প্রায় ২০ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মত, সময় মতো যথাযথ চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সরকারি হাসপাতালে যেসব বৃদ্ধ ও শিশু ভর্তি হচ্ছে, তারা বেশির ভাগই দরিদ্র। তাদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে বিশেষত বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি। তাই এই সময় দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র, খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে সম্মিলিতভাবে। সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায় থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App