×

মুক্তচিন্তা

জলবায়ু পরিবর্তন ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১৩ এএম

জলবায়ু পরিবর্তন ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশে দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে সেসব দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম সারিতে। জলবায়ুগত দুর্যোগের কারণে উপকূলীয় শিশুদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। শুধু উপকূলীয় অঞ্চলে নয়, উত্তরাঞ্চলেও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। খরা, লবণাক্ততা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সুপেয় পানির সংকট ইত্যাদি সমস্যা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুদের জীবন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি শিশু জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন দুর্যোগে উদ্বাস্তু শিশুরা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে! জলবায়ুগত সমস্যার ফলে বাল্যবিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দারিদ্র্যের কবলে পড়ে শিশুরা শিশুশ্রমের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িয়ে পড়ছে। অপুষ্টিতে ভুগছে উপকূলের হাজার হাজার শিশু। লবণাক্ততার কারণে সুপেয় পানি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। সর্বোপরি জলবায়ুগত বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হওয়ার ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। শিশুদের মানসিক বিকাশ মূলত তিন ক্ষেত্র থেকে হয় যথা- পরিবার, বিদ্যালয় ও সামাজিক অবস্থা। এই তিন জায়গার কোনোটা থেকেই শিশুর মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হচ্ছে না। জলবায়ুগত সমস্যার কবলে পড়া শিশুদের কাউন্সেলিং করা হয় না। অনেক শিশু সমস্যার কাছে হার মেনে বিপথে চলে যাচ্ছে। তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতির কাছে খাপ-খাইয়ে উঠতে পারছে না। শরণার্থী শিশুদের মানসিক অবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। সাধারণত শরণার্থী শিশুরা অন্য শিশুদের তুলনায় সাহায্য-সহযোগিতা কম পায়। শিশু বিপদের মধ্যে দিনের পর দিন কাটানোর পরও যদি সেই শিশুর পাশে থাকা যায়, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া যায় কিংবা কাউন্সেলিং করা যায় তাহলে সেটাই তার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট। সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে কাজ করতে হবে। সমাজের মূলধারায় তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। শিশুদের সুরক্ষায় সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়াতে হবে। শুধু পরিবার ও সমাজের চারপাশ থেকে নয়, বিদ্যালয় পর্যায় থেকে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের যতœ নিতে হবে। পরিবারের অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। জলবায়ুগত সমস্যায় জর্জরিত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতার জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, জলবায়ুগত সমস্যার কারণে যে শিশুরা আজ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত একটু যতœ পেলে, ভালো পরিবেশ পেলে তারাও এ সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হয়ে উঠতে পারে।

সাধন সরকার : শিক্ষক, লৌহজং বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জ। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App