×

সাহিত্য

নানা আয়োজনে সৈয়দ শামসুল হকের জন্মদিন উদযাপন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৫৬ পিএম

নানা আয়োজনে সৈয়দ শামসুল হকের জন্মদিন উদযাপন

সৈয়দ শামসুল হক। ছবি : সংগৃহীত

গল্প, কবিতা, উপন্যাসসহ সাহিত্যের সব শাখায় তিনি ছিলেন অনন্য বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। বহুমুখী প্রতিভার গুণে তিনি হয়ে ওঠেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ছিলো প্রয়াত এই সাহিত্যিকের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। সেমিনার ও আলোচনাসভার মধ্য দিয়ে সব্যসাচী লেখকের জন্মবার্ষিকী পালন করে বাংলা একাডেমি।

একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই আয়োজনে সৈয়দ শামসুল হকের সাহিত্যকর্ম বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। এতে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার।

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আলোচনায় অংশ নেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এতে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সৈয়দ শামসুল হকের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগামী প্রকাশনী প্রকাশিত সৈয়দ শামসুল হকের মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন আয়োজনের অতিথিরা।

সৈয়দ শামসুল হক : জলেশ্বরী থেকে বাংলাবিশ্বে শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার বলেন, সৈয়দ শামসুল হকের পটভূমি এ বিশাল বাংলা। তার প্রিয় জলেশ্বরীর মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি সমগ্র বিশ্বকে অবলোকন করেছেন, নতুন এক সৃজনবিশ্ব নির্মাণ করেছেন যার কাছে বাঙালিকে বারবার ফিরে আসতে হবে।

আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, পরবর্তী প্রজন্ম সৈয়দ শামসুল হককে যেভাবে মূল্যায়ন করছেন, প্রতিদিন তার রচনা পড়ছেন এবং সে সম্পর্কে আলোচনা করছেন, সেটাই একজন লেখকের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

রাজীব কুমার সরকার বলেন, সৈয়দ শামসুল হক আমাদের চিরবিস্ময়ের নাম। তিনি তার সৃষ্টিশীলতার বিচিত্র শাখায় বিচরণ করে যেভাবে এক নিজস্ব নন্দনবৃক্ষের জন্ম দিয়েছেন তা আমাদের চিরদিন অনন্য ছায়া দেবে।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, সৈয়দ শামসুল হক চিরজীবিত বিশ্ববাঙালি। তাকে কোনো নির্দিষ্ট পরিসরে মূল্যায়ন করা অসম্ভব। কারণ এক তরুমানুষের মতো তিনি সৃষ্টিসবুজ প্রভায় নিজেকে ক্রমাগত ছাড়িয়ে গেছেন।

ওসমান গনি বলেন, সৈয়দ শামসুল হকের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিজয়ের এই মাসে তার মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস প্রকাশ করতে পেরে আগামী প্রকাশনী গৌরবান্বিত।

সেলিনা হোসেন বলেন, সৈয়দ শামসুল হক বাংলা সাহিত্যের অবিস্মরণীয় নাম। তিনি আমাদের সৃষ্টিশীলতার নতুন নতুন রীতির সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন, বাংলা সাহিত্যের বৈভব বৃদ্ধি করেছেন। আমাদের শিল্পসাহিত্য ও জাতিসত্তার পথপরিক্রমায় তিনি সবসময় আমাদের প্রণম্য-মানব হয়ে থাকবেন।

আমাদের কুড়িগ্রাম প্রনিনিধি তৈয়বুর রহমান জানায়, কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮৭তম জন্মদিন বার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ চত্বরের কবির সমাধিতে পুষ্প্যমাল্য অর্পণের মাধ্যমে পাঠক ও ভক্তরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, কুড়িগ্রাম পৌরসভা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, কুড়িগ্রাম উন্নয়ন ফোরাম, সৈয়দ শামসুল হক স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে সরকারি কলেজ চত্বরের বটতলায় সৈয়দ শামসুল হক স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সৈয়দ হক মেলা।

উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, কবিপুত্র দ্বিতীয় সৈয়দ হক, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন, পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক, সৈয়দ শামসুল হক স্মৃতি পরিষদ এর আহ্বায়ক ইউসুফ আলমগীর, সাংবাদিক আতাউর রহমান বিপ্লব, কবি সাম্য রাইয়ান প্রমুখ।

বক্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সৈয়দ হকের সমাধিকে ঘিরে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি জানান। কমপ্লেক্সটি তৈরি হলে কুড়িগ্রামের সাহিত্য সংস্কৃতি আরো বিকশিত হবে। সেই সঙ্গে কবি সৈয়দ হকের সাহিত্য সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম আরো জানতে পারবে। মেলায় বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠনের স্টলসহ মেলা মঞ্চে দিনব্যাপী কবির লেখা গান, কবিতা পরিবেশিত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App