×

সম্পাদকীয়

ই-কমার্স প্রতারণা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৯ এএম

দেশে অনলাইন কেনাকাটায় জনপ্রিয়তা যেমন বেড়েছে, তেমনি জনপ্রিয় এ ব্যবসা প্রতারণার ফলে আস্থাও হারিয়েছে অনেকটা। ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ই-কমার্স বাজারের আকার বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার ক্রেতা অনলাইনে পণ্যের অর্ডার দেন। ১৩ থেকে ১৫ লাখ মানুষ বছরে একবার হলেও অনলাইনে অর্ডার করেন। অর্থাৎ বার্ষিক লেনদেন ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রবৃদ্ধির এ ধারা ক্রমবর্ধমান। তবে দুঃখজনক বাস্তবতা হলো ডেসটিনি, যুবক, ই-ভ্যালি, ই-অরেঞ্জের পর ই-কমার্সভিত্তিক কোম্পানিগুলোর একের পর এক প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ই-কমার্সভিত্তিক বড় ধরনের প্রতারণার অভিযোগে ১১টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের মামলা তদন্ত করছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। এর মধ্যে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিলেও এখন পর্যন্ত বাকিগুলো জমা দিতে পারেনি পুলিশ। তদন্তের দীর্ঘসূত্রতায় ঘুরপাক খাচ্ছে মামলার অগ্রগতি। জানা গেছে, ই-কমার্সভিত্তিক প্রতারণার ১১টি মামলার মধ্যে ৩টি ছাড়া ৮টি হয়েছে চলতি বছরে। এর ভেতর কলাবাগান থানায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে হওয়া ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। ই-অরেঞ্জসহ কয়েকটি মামলার কাজও এগিয়েছে। এছাড়া আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ পাওয়ায় তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। গত ৬ বছরে ৪১২ মানিলন্ডারিংয়ের মামলার মধ্যে ২৮১টি নিষ্পত্তি করলেও এখনো সিআইডির কাছে ১৩১ মামলা তদন্তাধীন। আমরা চাই দ্রুত তদন্ত শেষ করে এসব মামলার নিষ্পত্তি হোক। ই-কমার্স দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ খাতসহ যে কোনো ক্ষেত্রেই প্রতারণা কাম্য নয়। ই-কমার্সে যুক্ত কিছু কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কেনাকাটায় প্রতারিত গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকেই দিতে হবে। এই ব্যবসাকে অবিলম্বে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে আনা জরুরি। ডিজিটাল যুগে গ্রাহকদের পণ্যের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে খোলা হচ্ছে নানা রকম অনলাইন শপ। বলা চলে নাগরিক জীবনযাপনে অনলাইন কেনাকাটা এখন যুক্ত হয়ে আছে। স্মার্ট জীবনযাপনে সময় বাঁচাতে এবং প্রয়োজনে শহরের পাশাপাশি মফস্বলেও এর প্রভাব পড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে গহনা, পোশাক, মোবাইল ফোন, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, প্রস্তুত করা খাবার, বই, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ওষুধ ইত্যাদি। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের বাইরেও ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে বেচাকেনা করছেন অনেকে। ই-কমার্স নিয়ে বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। যারা ই-কমার্সের নামে প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জনস্বার্থ চিন্তা করতে হবে। এখানে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এবং বিনা স্টাবলিশমেন্টে ব্যবসা করা হচ্ছে। এতে সরকার যথেষ্ট রাজস্ব হারাচ্ছে। ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন জারি করা হয়। এই আইনের উদ্দেশ্য- কোনো ক্রেতা কোনোভাবে প্রতারিত যাতে না হয় এবং আইনত নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করা না হয় কিংবা সরবরাহ ব্যবস্থাসহ ক্রেতার কোনো ক্ষতি না হয় ইত্যাদি। এই আইনের বাস্তবায়ন জরুরি। সেই সঙ্গে ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে, বিশেষ করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের চটকদার বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে পণ্য হাতে পাওয়ার আগেই টাকা পাঠানো থেকে ক্রেতাকে বিরত থাকতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App