×

সম্পাদকীয়

কোচিং বাণিজ্য ও শিক্ষার মানোন্নয়ন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৬ এএম

কোচিং বাণিজ্য ও শিক্ষার মানোন্নয়ন

দেশজুড়ে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা, এমনকি থানা শহরেও রয়েছে এর শাখা ও প্রশাখার বিস্তার। সারাদেশে বড় ও ছোট মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ কোচিং সেন্টার রয়েছে। প্রতিবছর কোচিংয়ে লেনদেন হচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না শিক্ষা ধ্বংসের এই আত্মঘাতী প্রবণতা। এমন তথ্য দিয়ে খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। সরকার কোচিং বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিলেও ফলপ্রসূ হয়নি। গতকাল ভোরের কাগজে একটি প্রতিবেদনে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য ধরে বলা হয়েছে, গত ৬ নভেম্বর চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথমদিনে কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ২০২৩ সাল অর্থাৎ আগামী বছর থেকে ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণিতে, পরের বছর অষ্টম-নবমে এবং ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হচ্ছে। ২০২৫ সালের পর থেকে আমরা সব ক্লাসে নতুন শিক্ষাক্রমে যেতে পারব। তখন যে ধরনের শিক্ষাক্রম হবে, সেখানে শেখানোর পদ্ধতি যে রকম হবে, তাতে আর কোচিংয়ের প্রয়োজন থাকবে না। সেখানে এসএসসি, এইচএসসির কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। প্রি-প্রাইমারি থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত ২০২৫ সালের পরে আর কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। তার এ ঘোষণা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে সেটার দেখার বিষয়। ভোরের কাগজের সংবাদে বলা হয় রাজধানীর বেইলি রোড়, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন স্থানে কোচিং বাণিজ্য দিন দিন রমরমা হয়ে উঠছে। শুধু যে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় পাস বা ভালো ফলের জন্য কোচিং বাণিজ্যের প্রসার, তাই নয়। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষাও এই কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। শিক্ষার্থীদের ওপর ভার তৈরির শিক্ষানীতিও ওই বাণিজ্য প্রসারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে কোচিংয়ের পরিণামে শিক্ষার সার্বিক মান হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষার্থীর মেধার বিকাশ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি পিছু হটছে জ্ঞানচর্চার দিকটি, বিশেষ করে জ্ঞানের গভীরতায়। এ কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে প্রশ্নফাঁস ঘটছে ভয়াবহভাবে। দেশে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষায় এর ভয়াবহতা বেশি দেখা যায়। প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি ও এইচএসসি এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষার ক্ষেত্রেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে সরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। তা সত্ত্বেও প্রতিবারই প্রতি পরীক্ষায় নতুন নতুন কৌশলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ এখানেই। কোচিং বাণিজ্যরোধ করা গেলে প্রশ্নফাঁসের ঘটনাও কমে যাবে। এক দশক ধরে রমরমা বাণিজ্য করছেন এক শ্রেণির শিক্ষা ব্যবসায়ীরা। এতে একদিকে যেমন বাড়ছে পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা অপরদিকে সীমিত আসনে বাড়ছে প্রতিযোগীর সংখ্যা। কিন্তু সেই হারে বাড়ছে না শিক্ষার্থীর মান। সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাছে অনুরোধ, অতি দ্রুত বাংলাদেশের সব স্কুল, কলেজভিত্তিক কোচিং বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বেসরকারি স্কুল ও কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আরো অধিক নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App