×

সম্পাদকীয়

আগামী বাজেট জনবান্ধব ও সময়োপযোগী হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২৪ এএম

আগামী বাজেট জনবান্ধব ও সময়োপযোগী হোক

বিশ্বমন্দা ও সংকট মোকাবিলা এবং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের বাজেট প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইতিহাসের বৃহত্তম বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৫২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। বাজেট বাস্তবায়নে এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে ভর্তুকি ব্যয় বাড়ানো। নানা কারণে আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হবে ভর্তুকি খাতে। এজন্য এ খাতে ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী অবস্থা, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, রাজস্ব আয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এসব সূচক স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরাতে পারলে অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হবে সন্দেহ নেই। এজন্য রাজস্ব আয় বাড়ানো, রেমিট্যান্স বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপসহ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। প্রাথমিকভাবে দাম বাড়িয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের ভর্তুকি কিছুটা সমন্বয় করা হলেও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সার ও খাদ্যপণ্য আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় বাড়ানো এবং দারিদ্র্য কমানোর মতো কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি বলে মনে করি। মহামারি করোনার ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, তাতে চাপের মুখে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আশা করি সময়োপযোগী এবং জনবান্ধব কর্মসূচিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে উপস্থাপিত হবে আগামী বাজেট। নিত্যপণ্যের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া হচ্ছে। বাজেট পরিকল্পনায় জনস্বার্থে যা খুবই জরুরি বলে মনে করি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মন্দা মোকাবিলার বিষয়টি সামনে রেখে আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ শুরুতে গুরুত্ব দিয়েছেন। এছাড়া চলতি বাজেটে খাদ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে অপ্রয়োজনীয় আমদানি বন্ধ করা দরকার। এসব আমলে নিয়ে সুপরিকল্পিত বাজেট প্রণয়ন করতে হবে আগামীতে। ভর্তুকি ব্যয় কমিয়ে আনা এবং সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর মতো কর্মসূচি হাতে নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে আগামীতে। এমনিতেই বাড়তি দ্রব্যমূল্য তার ওপর ভর্তুকি কমানোর কারণে আবার যেন বিদ্যুৎ-জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি জনগণের কষ্টের কারণ না হয় সেদিকটিও বিবেচনায় নিতে হবে বাজেটে। গত অর্থবছরের গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনা করে আগামী অর্থবছর কেমন হতে যাচ্ছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে গতিপ্রকৃতি ঠিক করতে হবে। সামনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। বৃহৎ বাজেট আমাদের অর্থনীতির কলেবর বৃদ্ধি, জাতীয় ব্যয় বৃদ্ধিরই প্রতিফলন। বাজেটে নির্ধারিত ব্যয়ের অঙ্ক যত বড় হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং উন্নয়ন প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন ততই বড় চ্যালেঞ্জ। এ অর্থবছরে সরকারের কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। আগামী বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবহন খাতে বাজেট বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি কর্মসংস্থানেও গুরুত্ব দিতে হবে। পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে আগামীর বাজেট। প্রতিটি খাতে বাড়াতে হবে দক্ষতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতা। রোধ করতে হবে অপচয়। আমরা আশা করব সরকার তার নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি পূরণের বাজেট প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App