×

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন: নেতৃত্ব তৈরির প্রস্তুতি সম্পন্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৩০ এএম

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন: নেতৃত্ব তৈরির প্রস্তুতি সম্পন্ন

ছবি: সংগৃহীত

আগামী শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম অধিবেশন শেষে নামাজ ও দুপুরের খাবারের বিরতির পর কাউন্সিলরদের নিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আগামী তিন বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রত্যয়’। সম্মেলন সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল প্যান্ডেলের পুরো কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া সম্মেলনে গঠিত ১১টি উপকমিটিও তাদের সব কাজ সম্পন্ন করে এনেছে। এবার সম্মেলনে এক লাখের বেশি ডেলিগেট ও ৭ হাজার কাউন্সিলর থাকছেন। গতকাল বিতরণ করা হয়েছে ডেলিগেট ও কাউন্সিলর কার্ড।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসার পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ূয়া। সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের।

স্বাগত বক্তব্য রাখবেন অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। তবে এবার গঠনতন্ত্রে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, এবার বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তুতি আছে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশি কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে বিদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের এবার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সম্মেলনে এবার বড় আয়োজন হচ্ছে না। একদিনেই শেষ হবে সম্মেলনের কার্যক্রম। এরই মধ্যে সম্মেলনের পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়কের বক্তব্য ছাপার কাজ শেষ হয়েছে।

মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটিসূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের জন্য মঞ্চ, প্যান্ডেল ও সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে ৮২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৪ ফুট প্রশস্তের মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। তিন স্তরের মঞ্চের প্রথম সারিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন দলের সিনিয়র নেতারা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারিতে বসবেন অন্যরা। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের ১৪০ নেতা মঞ্চে থাকবেন। মঞ্চে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র থাকবে। পেছনে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি থাকবে। সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছবিও থাকবে।

আরো থাকবে জাতীয় চার নেতার ছবিসহ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শামসুল হক এবং মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের ছবি। সম্মেলনে প্রবেশের জন্য ৫টি গেট থাকবে। এর মধ্যে ভিআইপি গেট থাকবে। ৪টা গেট থাকবে কাউন্সিলরদের প্রবেশের জন্য। ডেলিগেটের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সকাল ৭টা থেকে কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের প্রবেশের গেট খুলে দেয়া হবে। ৫০ হাজার মানুষের আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, সম্মেলস্থলে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা থাকবে। নেতাকর্মী সবাই সহযোগিতা করছে, যাতে আমাদের কাজটা দ্রুত এবং কম খরচে হয়। ২৪ ডিসেম্বর সকালেই সম্মেলনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। যেহেতু এবার একদিনের সম্মেলন হবে। প্রথম অধিবেশনের পরে খাবার ও নামাজের বিরতি হবে। তারপরেই আমাদের মূল অধিবেশন, কাউন্সিল অধিবেশন হবে। সারাদেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিল উপস্থিত থাকবেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এবারের সম্মেলনে নেতাকর্মী ও অতিথি মিলিয়ে এক লাখের বেশি লোক অংশ নেবেন। ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর বাইরে বিদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১টি উপকমিটি গঠন করে দিয়েছেন। প্রতিটি কমিটিই আন্তরিকভাবে নিরলস পরিশ্রম করে সম্মেলন সফল করতে স্ব স্ব কাজ অত্যন্ত সূচারুরূপে গুছিয়ে এনেছেন। আশা করছি, সারাদেশে কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের অংশগ্রহণে অত্যন্ত সফল একটি কাউন্সিল এবারো অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে বুধবার সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব সাংগঠনিক জেলা-মহানগর শাখার কাউন্সিলর-ডেলিগেট কার্ড গতকাল বিতরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে বিতরণ করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App