×

জাতীয়

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে বড় পরিবর্তন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:১৯ পিএম

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে বড় পরিবর্তন

ছবি: ভোরের কাগজ

# নিয়োগ পরীক্ষা হবে বিভাগভিত্তিক # প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চলার ইঙ্গিত # ফের প্রাথমিকে অনলাইনে বদলি শুরু # নতুন শিক্ষকের যোগদান ২২ জানুয়ারি

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে সারা দেশে একযোগে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হবে না। পরীক্ষা হবে এক বা একাধিক বিভাগ অনুযায়ী।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ‘এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ইরাব) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সচিবালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ এ তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইরাব সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামানসহ আরও অনেকে।

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন আনার। এর অন্যতম হলো ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া। অর্থাৎ একটি বিভাগ অথবা একাধিক বিভাগ নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হবে। এ পরির্বতনের ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ হয়েছে। আগে সারাদেশে একযোগে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হতো।

কেন নিয়োগ কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে (পিইডিপি ৪) প্রায় ১ লাখ শিক্ষক নিয়োগের কথা রয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনে। এরই মধ্যে চলতি মাসে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়োগটি শেষ করতে দুই বছর সময় লেগেছে। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে গিয়েছিল। এতে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ভবিষ্যতে যেন তা না হয় এ জন্য আমরা এখন থেকেই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছি।

এতে আইনগত কোন জটিলতা নেই বলেও জানান তিনি। বলেন, এখন আমরা উপজেলা ভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছি। সেই প্রেক্ষিতে বলা যায়, এতে আইনগত কোন জটিলতা নেই। আগামী বছরই প্রাথমিকে নতুন নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। আশা করছি আগামী বছরই প্রাথমিকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সম্ভব হবে। চলতি বছরের মতো ভবিষ্যতেও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার ইঙ্গিত দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব।

তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে না এ কথা বলা হয়নি। পরীক্ষার সংখ্যা কমাতে বলা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রাক-প্রাইমারিতে একদমই পরীক্ষা নেয়া হবে না। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে। পিইডিপি-৪ প্রকল্পে দাতা সংস্থার কাছে কাম্য দক্ষতা মূল্যায়নের বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার আছে। তাই দক্ষতা মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা নিতেই হবে।

ভবিষ্যতেও বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া চলমান থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনকার প্রেক্ষাপটে এটি (বৃত্তি পরীক্ষা) নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৪ সালে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন হবে এরপর তা মূল্যায়ন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটি চলমান থাকবে কিনা বা এতে কোন পরিবর্তন আসবে কিনা তা অংশীজনদের পরামর্শ অনুযায়ীই নেয়া হবে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বিশিষ্টজনদের আহ্বানের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশজনদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করে চলতি বছর বৃত্তি পরীক্ষার নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে লিখিত পরীক্ষা কোথাও তুলে দেয়া হয়নি। আমরা পরীক্ষা এমন ভাবে নেয়ার চেষ্টা করছি যেন কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এ পরীক্ষার কারণে বাড়তি চাপ অনুভব না করে। মূল বই থেকেই পরীক্ষার প্রশ্ন করা হবে। বৃত্তি পরীক্ষা কারও ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না, কারণ বিষয়টি বাধ্যতামূলক না। কেউ চাইলেও এখানে অংশ নাও নিতে পারে। বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া নতুন শিক্ষাক্রমের সঙ্গে কোন ভাবেই সাংঘর্ষিক না। বরং এটি সহায়ক।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক বৃত্তি প্রাপ্তি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য একটি প্রণোদনা। এতে সরকারের একটি বাজেটও রয়েছে। পরীক্ষা না নিলে এই বাজেটটি অন্য খাতে সমন্বয় করতে হবে। বৃত্তি প্রাপ্তি একজন শিক্ষার্থীর পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আর সবাইকে তো বৃত্তি দেয়া সম্ভব না। তাই বৃত্তি দেয়ার মাপকাঠি নির্ধারণে একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া আমাদের অনুসরণ করতেই হবে। এ জন্য আমাদের পরীক্ষা নিতেই হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইনে শিক্ষক বদলির কার্যক্রম আবার শুরু হওয়ার কথাও জানান ফরিদ আহাম্মদ।

তিনি বলেন, এবারই প্রথম অনলাইনে শিক্ষক বদলির আবেদন নেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার আবেদন পড়েছিল। এর মধ্যে ২৩ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে আবার অনলাইনে বদলি আবেদন আবারও শুরু হবে। যা চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২৭ তারিখেই বদলি সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App