×

সম্পাদকীয়

কৃষিজমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:০৫ এএম

খাদ্য উৎপাদনে আবাদি জমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও আবাসনের কারণে আমাদের প্রচুর পরিমাণ ভালো মানের ও উর্বর জমি হারিয়েছি। এর কারণ হচ্ছে আগে যারাই সরকারে ছিল, তারা এতে মনোযোগ দেয়নি। কৃষিজমি সংরক্ষণে তার সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তিনি জানান। গত সোমবার গাজীপুরের ২৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও প্রযুক্তি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এটা সত্য যে, দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও জনসংখ্যা বিবেচনায় টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষিজমি, বাস্তুব্যবস্থাপনা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়টি বারবার তুলে ধরছেন। কৃষিজমি রক্ষায় তার নির্দেশনা বাস্তবানুগ এবং তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের সব নদ-নদীর পানি এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে। শিল্পকারখানার অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে কৃষিজমির মাটি এবং বায়ুমণ্ডলে ভয়াবহ দূষণ দেখা দিয়েছে। এসব কারণে প্রতি বছর কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে। একদিকে নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান আবাসন, নগরায়ণ, শিল্পায়ন নতুন নতুন রাস্তাসহ অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বছরে অর্ধলক্ষাধিক হেক্টর কৃষিজমি স্থায়ীভাবে অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বছরে প্রায় ৬৯ হাজার হেক্টর কৃষিজমি আবাসন ও শিল্পায়নসহ অকৃষি খাতের দখলে চলে যাচ্ছে। কৃষিশুমারি ১৯৮৪ ও ২০০৮-এর মধ্যে তুলনা থেকে দেখা যায়, চাষকৃত এলাকার পরিমাণ কমেছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার একর, অর্থাৎ ২৪ বছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে দেশে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতির ওপর করোনার বিরূপ প্রভাব উত্তরণে বাজেট বরাদ্দ থেকে বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যেখানে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা চালু রাখাসহ সরবরাহ ব্যবস্থা বজায় রাখা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের কর্মপরিকল্পনা সফল হবে না, যদি কৃষিজমি রক্ষা করা না যায়। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব হবে বহুমুখী। কৃষি খাত আমাদের বড় শক্তি। পৃথিবীর সব রাষ্ট্রেই ভূমি ব্যবহার বিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়, যা আমরা করি না। দেশে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহারে পরিপূর্ণ একটি আইন ও বিধিমালা এখনো প্রণয়ন করা যায়নি। ভূমি মন্ত্রণালয়ে আটকে রয়েছে এটি। আইনটি দ্রুতই পাসপূর্বক প্রয়োগে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনের খসড়া হয় ২০১১ সালে। এরপর ১০ বছর কেটে গেছে। কিন্তু চূড়ান্ত হয়নি কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন। এ রকম একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং তা মানার বাধ্যবাধকতা নিয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App