×

সারাদেশ

নৌকার বিরুদ্ধে আ. লীগ সভাপতির অবস্থান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:৩১ পিএম

নৌকার বিরুদ্ধে আ. লীগ সভাপতির অবস্থান

ছবি : ভোরের কাগজ

নোয়াখালী সদর উপজেলার ৬নং নোয়াখালী, ৭নং ধর্মপুর ও ৩নং নোয়ান্নই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ধর্মপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল (খলিল কোম্পানী)। দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় দল থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের বহিষ্কার দাবি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন সাধারণ মানুষও।

ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চেয়ারম্যান এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবুর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল (খলিল কোম্পানী)। তার প্রতীক আনারস। এ নির্বাচনে দলের ইউনিয়ন সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন দলীয় প্রতীক চেয়ে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছে। তাই তিনি দলের প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সরাসরি বিদ্রোহী প্রার্থী ইব্রাহিম খলিলের আনারস প্রতীকের পক্ষে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠকে অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আনারস প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন।

দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা নৌকা প্রতীকের বিরোধীতা করায় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝেও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। এতে নৌকার প্রার্থীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্রোহী ও দলীয় নেতারা।

নাম প্রকাশে অনচ্ছুক একাধিক দলীয় কর্মী বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন একসময়ে জামায়াতের লোক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে আসার পর ডেসটিনি গ্রুপের বড় কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় তিনি ডেসটিনি গ্রুপের বড় অংকের টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে বেড়ান। পরে ২০১২ সাল পরবর্তী আর্মি মো. জামাল উদ্দিন নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় রাতারাতি আওয়ামী লীগের লোক হয়ে যান। একইভাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিলও একসময়ে বিএনপির লোক ছিলেন। মুজিব আদর্শের লোক না হওয়ায় তারা নিজ স্বার্থে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দ্বিধাবোধ করেননি। তাই আর্মি জামাল উদ্দিন ও ইব্রাহিম খলিল কোম্পানীকে দলীয় পদসহ দলের সাধারণ সদস্য থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

কেন বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন এবং বিএনপির সঙ্গে অতীতে কোন সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা জানতে ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারস প্রতীকের প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল কোম্পানীকে মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেব না, পরে আপনাদের জানানো হবে।

ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন ডেসটিনি গ্রুপের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সার্ভিস অবস্থায় আমরা শত্রু পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। এখন একটি মহল নিজেদের স্বার্থে আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় আমাকে জামায়াতের লোক বলছে, এটি হাস্যকর।

ইউপি নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করেনি, তার পক্ষে ভোট করার অনুরোধও করেনি। এলাকায় তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি দলের বিরুদ্ধে নয়, চেয়ারম্যান সাবুর বিরুদ্ধে।

নৌকার প্রার্থী এডভোকেট ছিদ্দিকুর রহমান সাবু বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আর্মি মো. জামাল উদ্দিন জামায়াত ঘরোনার লোক এবং সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বিএনপি ঘরোনার। তাই তারা নৌকার বিপক্ষে ভোট করছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল কোম্পানির আনারস প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন সভাপতি আর্মি জামাল। তাদের এমন কর্মকাণ্ড আমাকে হতাশ করেছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে তারা টাকার বিনিময়ে পদ-পদবী পেয়ে এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস জাহের বলেন, কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সত্যতা যাচাই করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App