×

সম্পাদকীয়

জামায়াতের জঙ্গি কানেকশন গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১১ এএম

জামায়াতের জঙ্গি কানেকশন গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত

আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য মাঠে নেমেছে জামায়াত। সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলো আবার তৎপরতা শুরু করেছে। জামায়াত-জঙ্গি একই সূত্রে গাঁথা- এমন অভিযোগ আমরা শুনে আসছি। রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে গত শনিবার বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নতুন জঙ্গি সংগঠনটিকে সমর্থন করাসহ অর্থায়ন করেছেন তার প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া এ দলটির অন্যদের বিষয়েও বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। কিছুদিন আগে জামায়াতের আমির ডা. মো. শফিকুর রহমানের ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবকটি ইউনিট ও গোয়েন্দারা খুঁজে খুঁজে জামায়াতের জঙ্গি কানেকশনের তথ্য সংগ্রহ ও অনুসন্ধান শুরু করেছে। ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেটিই প্রমাণ হলো। নানা কারণেই গত এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রচণ্ড রাজনৈতিক চাপে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এই দলটির প্রথম সারির প্রায় সব নেতা দণ্ডিত হয়েছেন। তাদের কারো কারো ফাঁসিতে ঝুলে জীবনাবসান হয়েছে। কারো প্রাণদণ্ড হয়েছে। কেউ কেউ আজীবন দণ্ড নিয়ে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। এই বাস্তবতার মধ্যেই নিবন্ধন হারানো দলটি নানাভাবে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে। ভেতরে ভেতরে তলা গোছানোর কাজ তারা করছেন অতি বিচক্ষণতার সঙ্গে। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে এলাকায় এলাকায় তারা করছেন গোপন বৈঠক। আলোচনার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন বসতবাড়ি, কোচিং সেন্টার ও ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সামাজিক গণমাধ্যমকে তারা প্রচারের নির্ভরযোগ্য জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে- হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। জঙ্গিরা নানাভাবে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। ভেতরে ভেতরে এরা সুসংগঠিত হওয়ার কাজ চালাচ্ছেন। তাদের সহিংস কর্মকাণ্ড দেশের জন্য বড় শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। হিজরতের নামে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ঘরছাড়া অনেক তরুণ পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সংগঠনের ছত্রছায়ায় সেখানে তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। গোপনে উগ্রপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। হিজরতের নাম করে জঙ্গিবাদের নতুন মেরুকরণ এক ভয়াবহ নাশকতার পূর্বাভাস। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। বলা যায়, দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগাম তথ্য নিয়ে বেশ কিছু জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গি সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। জামায়াতের জঙ্গি কানেকশন হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার মামলাটি ঝুলে আছে। জামায়াত সত্যি নিষিদ্ধ হবে কিনা, নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কী কৌশল নেবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। দেশবাসী চান, জামায়াতকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App