×

রাজনীতি

বিএনপির কার্যালয়ে ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৫৪ পিএম

বিএনপির কার্যালয়ে ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি

ছবি: সংগৃহীত

৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশী তল্লাশীর ঘটনায় নগদ অর্থসহ অর্ধ কোটি টাকার বেশী সম্পদ ক্ষতি ও লুট হয়েছে হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস সহ গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলাসমূহ প্রত্যাহারের দাবি জানান। রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশী তল্লাশীর ঘটনা তুলে ধরে বলেন, এই ঘটনায় নগদ অর্থসহ ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমান আনুমানিক ৫০,৮২,৫০০/= (পঞ্চাশ লক্ষ বিরাশি হাজার পাঁচশত) টাকা। তিনি বলেন, কোনো অফিস বা গৃহ তল্লাসীর সময় মালিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসাবে রাখার সাধারণ আইন অগ্রাহ্য করে পুলিশ যা করেছে তা’ হানাদার বাহিনীর আচরণকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মোশাররফ বলেন, পুলিশ তাদের মামলায় বলেছে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা নাকি ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি এবং ককটেল নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করেছে। বিপুল ও মারাত্মক সব আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কয়েক হাজার পুলিশকে ইট-পাথর, বাঁশের লাঠি ও তাদের ভাষায় ককটেল দিয়ে আক্রমণ করার মত হাস্যকর অভিযোগ জনগণ বিশ্বাস করে না। পুলিশের এজাহারেই বলা হয়েছে যে তারা ৭ ডিসেম্বর বিকালে মোট ১৭৯টি টিয়ারগ্যাস ও ৪৬০টি শর্টগানের গুলি ছুড়েছে এবং ৬টি সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করেছে। প্রকৃত পক্ষে এই সংখ্যা কয়েকগুন বেশী। তিনি বলেন, এর বিপরীতে তাদের উপর আক্রমণকারী বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবহৃত অস্ত্র হিসাবে আলামত দেখানো হয়েছে ফুটপাত ও রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ৫ বস্তা ইটের টুকরা (যা শহরের যে কোন সড়ক থেকে যে কোন সময় সংগ্রহ করা যায়), ৮০টি বাঁশের লাঠি (যা শহরের বহু স্থানে প্রকাশ্যে বিক্রয়ের জন্য রাখা হয়) ও লালটেপে মোড়ানো কথিত ককটেলের ভঙ্গাংশ (যা ব্যবহৃত টিয়ার গ্যাসের শেল কিম্বা পথের আবর্জনারও অংশ হতে পারে)। তিনি বলেন, এমন অসম যুদ্ধের বিবরণ ছোটদের গল্প কিম্বা স্বৈরাচারী শাসকদের প্রেসনোটেই শুধু দেখা যায়। তথাকথিত ক্রসফায়ারের গল্পের মতই এসব গল্প এখন শুধুই কৌতুকের খোরাক এবং অক্ষমের আর্তনাদ। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, দলের মহাসচিবকে অফিসের নীচে বসিয়ে রেখে এবং দলের অন্যান্য নেতাদের কয়েকটি কক্ষে আটকে রেখে অসংখ্য টিয়ারগ্যাস, গুলি, সাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে গোটা এলাকাকে রণক্ষেত্র বানিয়ে পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্য দলীয় কর্মীর মত প্রতিপক্ষকে হেয় ও বিপদাপন্ন করার জন্য সাদা ব্যাগে করে নিজেরাই ককটেল নিয়ে মহাসচিবের ও জাসাস কার্যালয়ের টয়লেটে মোট ১৫টি ককটেল রেখে তা উদ্ধারের যে নাটক করেছে তা মিডিয়া ও সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, অফিস থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ডডিক্স, নথিপত্র, ব্যাংকের কাগজপত্র, নগদ অর্থ লুট করা প্রকৃত পক্ষে একটি ডাকাতির ঘটনা। ৭ ডিসেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশী হামলার পর পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন কক্ষ ভাংচুর ও মালামাল লুটে অংশ নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনার পর গত কয়েক দিনে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১৩০০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব ঘটনা জনগণের তীব্র ঘৃণা ও অনাস্থার শিকার পতনোম্মুখে সরকারের স্বৈরাচারী কায়দায় টিকে থাকার ব্যর্থ প্রয়াস বলেই দেশবাসী মনে করে। সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App