প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে মহান বিজয় দিবসের ৫১-তম বার্ষিকী।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী বাংলাদেশী, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নেতাকর্মীবৃন্দ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গসহ দূতাবাসের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে দিবসের শুরুতে জাতীয় সংগীত বাজিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তি সংগ্রামের সকল শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়।

এরপর, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেয়া বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনার শুরুতে ফ্রান্সে বসবাসরত তিনজন মুক্তিযোদ্ধা তাদের যুদ্ধকালীন ত্যাগ ও সংগ্রামের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ও বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তিতে তার সংগ্রাম এবং ত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি এসময় ১৯৭১ সালের মুক্তি সংগ্রামে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের হাতে শহীদ হওয়া বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

এক দশকের বেশি সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সৃষ্ট উন্নয়নের ধারা বর্ণনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, যে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়ষী প্রশংসা করেন।

রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের আগে সরকারের আইসিটি ডিভিশনের পাঠানো ডিজিটাল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এরপর, উপস্থিত সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যাক্তিরা দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন।

গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ এ সরকারের জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপনের ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সকল প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংশোধন সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ প্রবাসী এবছর দূতাবাসের আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

নবীন-প্রবীণ প্রবাসীদের সরব ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এবছর মহান বিজয় দিবসের উদযাপনে  ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রবাসীরা দূতাবাসের বিভিন্ন সেবা প্রদানে দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূতকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং পাসপোর্ট সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের জন্য সকল প্রবাসীদের কাছে আহ্বান জানান এবং বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে মধ্যাহ্নভোজণ এর আয়োজন করা হয়।