×

অর্থনীতি

অভয়নগরের ধলিয়ার বিলে নির্মিত হবে ইপিজেড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৪ এএম

অভয়নগরের ধলিয়ার বিলে নির্মিত হবে ইপিজেড

ছবি: ভোরের কাগজ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধলিয়ার বিলে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) নির্মিত হতে যাচ্ছে। এখানে মিল, কলকারখানা নির্মিত হবে। আর মিল, কলকারখানার চাকা ঘুরলেই পাল্টে যাবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র। শিল্প কলকারখানার মালিক, শ্রমিক, বিদেশি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কর্মযজ্ঞে মুখরিত থাকবে গোটা এলাকা। এতে কর্মসংস্থান হবে দেড় লাখ মানুষের। এ লক্ষ্যে যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়ন এলাকায় ৫০২ একর ৬১ শতক জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। যশোর ও অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে দেশে আরো রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ কাজের জন্য বেছে নেয়া হয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে। শেষমেষ সিদ্ধান্ত হয়, যশোরের অভয়নগর অঞ্চলের ভবদহ জলাবদ্ধতার কান্না থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে এ উপজেলায় নির্মাণ করা হবে ইপিজেড। সে লক্ষ্যে গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইপিজেডের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল কবির অভয়নগরের ভবদহ এলাকা পরিদর্শন করে স্থান নির্বাচন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যশোর ও অভয়নগর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তারা যশোর জেলায় শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে অভয়নগর উপজেলার আটটি মৌজার পাঁচ শতাধিক একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এরপর প্রকল্প পরিচালক ওই বছরের ১৯ অক্টোবর যশোরের জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেন। এতে ইপিজেড স্থাপনে প্রেমবাগ ইউনিয়ন এলাকায় ধলিয়ার বিলে ৫০২ একর ৬১ শতক জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা দেয়া হয়। অধিগ্রহণকৃত জমিগুলো হলো- বালিয়াডাঙ্গা মৌজার ১১২ একর ৭৭ শতক, আরাজি বাহিরঘাট মৌজায় ৯৯ একর ৪৬ শতক, প্রেমবাগ মৌজায় ১৭১ একর ৮৮ শতক, রাজাপুর মৌজায় ৯০ একর ৭৫ শতক, চেঙ্গুটিয়া মৌজায় ২৫ একর ২৪ শতক, মাগুরা মৌজায় ৯৩ শতক, মহাকাল মৌজায় এক একর ৪৫ শতক ও আমডাঙ্গা মৌজায় ১৫ শতক। প্রস্তাবনায় বলা হয়, যেহেতু উপজেলার ভবদহ এলাকায় প্রায় সারা বছরই জলাবদ্ধতা থাকে। ওই এলাকায় ফসল উৎপাদন হয় না। মাছ চাষ হলেও সেটি পানির তোড়ে ভেসে যায়। স্থানীয়রা বিলে সামান্য মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ কারণে সরকার ওই স্থানে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে ভবদহ অঞ্চল ও যশোর জেলাসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ইপিজেডের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। রপ্তানিমুখী এসব কারখানায় এ অঞ্চলের দেড় লাখ মানুষ কাজের সুযোগ পাবে। এছাড়া প্রকল্পে উপকৃত হবে ১০ লাখ মানুষ। এরপর জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে জমির মালিকদের চিঠি দেয়া হয়। যার তালিকা চূড়ান্ত করে এখন জমির মালিকদের টাকা প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। একই সঙ্গে চলছে ক্রটিপূর্ণ কিছু জমির দলিল যাচাই-বাছাইয়ের কাজ। যশোর কালেক্টরেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বলেন, যুগ যুগ ধরে যশোরের দুঃখ হয়ে আছে ভবদহ অঞ্চল। বিলপাড়ের মানুষ জলাবদ্ধতার কারণে বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থায় এখানে ইপিজেড স্থাপিত হলে এলাকার অর্থনীতির চাকা আবারো সচল হয়ে উঠবে। অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থান্ডার কামরুজ্জামান বলেন, প্রেমবাগ ইউনিয়নে ইপিজেড স্থাপনে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। যা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান জানান, ভবদহ এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন বিধি মোতাবেক ভূমি অধিগ্রহণসহ যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী জমির মালিকদের মূল্য পরিশোধ করা হবে। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। অভয়নগরে ইপিজেড স্থাপনের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল কবীর বলেন, যশোর ইপিজেডটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার সাভার ইপিজেডের মতোই নির্মিত হবে। এতে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। এখানে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে ভবদহ অঞ্চলের অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App