×

সাহিত্য

সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:১২ পিএম

সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিজয় দিবস উদযাপন

শুক্রবার ছায়ানটে নৃত্যের তালে তালে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

তেজোদীপ্ত কথামালায়, গানের শাণিত সুরে, নৃত্যের উদ্বেলিত ছন্দে, নাটকের বজ্রকণ্ঠে, কবিতার দুর্বিনীত সাহসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণের মধ্য দিয়ে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তি উদযাপন করলো বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের ছোট বড় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এদিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। যেখানে গানে, কবিতায়, নৃত্যে বার বার উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত হয়ে জঙ্গিবাদ ও রাজাকারমুক্ত অসাম্প্রদায়িক এক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।

ছায়ানট

করোনাভাইরাস মহামারি কাটিয়ে আবারও বিজয় দিবসে ‘দেশগান’ এর আয়োজন করেছে ছায়ানট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজন হলো এ উৎসব। বিকেল পৌনে চারটায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে নৃত্যসহ নয়টি সম্মেলক গান, দুটি একক গান (বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে) ও দুটি পাঠ নিয়ে। শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ এবং আবু হেনা মোস্তফা কামালের ‘ছবি’ কবিতা আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, একক গান গেয়ে শোনান নাসিমা শাহিন ফ্যান্সি ও সুমন মজুমদার।

‘দেশাত্মবোধক গানগুলো’ বেছে নেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, গোবিন্দ হালদার, আবদুল লতিফ, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, মোহাম্মদ মোশাদ আলী, মীরা দেববর্মণ ও শাহ আবদুল করিমের রচনা থেকে।

নৃত্য পরিবেশন করা হয় ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’, ‘এখন আর দেরি নয়’, ‘চল্ চল্ চল্’, ‘সঙ্ঘ শরণ তীর্থযাত্রা’, ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ বাংলার খ্রিস্টান বাংলার মুসলমান’, ‘সামাল সামাল সামাল ওরে সামলে তরী বাইয়ো’, ‘বলো বলো রে বলো সবে বলো রে বাঙ্গালির জয়’, ‘আমি টাকডুম টাকডুম বাজাই’, ‘লাখো লাখো শহীদের রক্তমাখা’ সম্মেলক গানের সঙ্গে।

অনুষ্ঠান শেষ হয় ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বাঙালির পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের ক্ষণকে স্মরণ করে সম্মিলিত কণ্ঠে ৪টা ৩১ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে।

নৃত্যশৈলীর সঙ্গে মুক্তকণ্ঠে দেশগান গাওয়া এবং দেশকথা শোনার ও বলার গোটা আয়োজনকেই প্রতীকীভাবে জাতীয় পতাকার রঙ দিয়ে সজ্জিত করার প্রয়াস ছিল এ আয়োজনে। সম্মিলিত কণ্ঠে দেশের গান গাওয়ার এই আয়োজনে সর্বাত্মক নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট

‘স্পর্ধায় তাড়াব ধেয়ে আসা কালো’ স্লোগান নিয়ে রাজধানীর নয়টি মঞ্চে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘বিজয় উৎসব ২০২২’ শেষ হলো গতকাল।

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, মিরপুর ৬ নম্বর মুকুল ফৌজ মাঠে ১৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, দনিয়া মাসুদ মঞ্চে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাঠে ১৬ ডিসেম্বর এবং পূর্বাচল জয় বাংলা স্কয়ারে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এ ছাড়া পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কে শুরু হরে ১৯ থেকে ২০ ডিসেম্বর।

১৫০টির বেশি সংগঠনের সাড়ে তিন সহস্রাধিক শিল্পী এবারের বিজয়োৎসবে অংশ নেন।

জোটের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্ বলেন, একাত্তরের ঘাতক-দালাল, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী, ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী এবং ২১ অগাস্ট শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলাকারী- একই বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি। তাদের সাথে কোনো আপস করা চলবে না।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে চলছে আট দিনব্যাপী বিজয় উৎসব। গত ৯ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হয় গতকাল ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে। জাদুঘর মিলনায়তন এবং মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে অনুষ্ঠিত হয় উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।

সকাল ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাদুঘর মিলনায়তন এবং মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে দিনব্যাপী ছিল এ সাংস্কৃতিক আয়োজন।

জাদুঘর মিলনায়তনে ‘শিশু-কিশোর আনন্দানুষ্ঠান’ শীর্ষক আয়োজনে অংশ নেয় সোসাইটি ফর দি ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন, কল্পরেখা, এসওএস শিশুপল্লী, বধ্যভূমির সন্তানদল, খেলাঘর, ইউসেপ বাংলাদেশ ও হাজারীবাগ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৬টায় বাউল গান পরিবেশন করে কুষ্টিয়ার লালন আখড়া ‘আরশীনগর’।

বিকেল চারটায় মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে স্মৃতিচারণ করেন শহিদের সন্তানেরা। এরপর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় চারুলতা একাডেমি, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, ঢাকা সিটি স্কুল, বধ্যভূমির সন্তানদল, যুব বান্ধব কেন্দ্র, মিথস্ক্রিয়া আবৃত্তি পরিসর, সংগীত সমাজ কল্যাণপুর, সৌখিন একাডেমি, পঞ্চায়েত শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ও থিয়েটার গেরিলা।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি গবেষক মফিদুল হক বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল, পঁচাত্তের পর সেই ইতিহাসকে বিকৃত করার নানা রকম চেষ্টা হয়েছে। তবে সেই ইতিহাসকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস সচেতন হতে হবে।

শিল্পকলা একাডেমি

জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজয় উদযাপন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সকাল ৯টা থেকে স্বরচিত কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও দেশের গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এর আগে একাডেমির কর্মকর্তা, শিল্পী ও কর্মচারীরা স্মৃতিসৌধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।

বিকেলে একাডেমির নন্দনমঞ্চে শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক আয়োজনে একক সংগীত পরিবেশন করেন শিশু শিল্পী সায়কা নাজিফা বাবন, আনিকা ইবনাত নমিরা (স্পর্শ ব্রেইল), আজমাইন মাহির ইভান, হাবিবা আক্তার লোপা (স্পর্শ ব্রেইল)। দলীয় নৃত্য ‘বীরপুরুষ’ ও ‘আমি ধন্য হয়েছি’ পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু নৃত্যদল। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু শিল্পীদের দল কারিশমা ‘স্বাধীনতা এই শব্দটি আমাদের’ এর সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দের একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

সন্ধ্যায় একাডেমির নন্দন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সমেবেত নৃত্য, সমবেত সংগীত, কবিতা পাঠ ও অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটারের পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন ‘তুমি বাংলার দ্রুবতারা’ গানের সঙ্গে একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্য শিল্পীরা, ‘প্রতিদিন তোমায় দেখি’ গানের সাথে নৃত্যালোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র; ‘পদ্মা সেতু বিজয় গাঁথা ও বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ’ গানের সাথে সৃষ্টি নৃত্য দল; ‘বুকের ভিতর আকাশ নিয়ে’ গানের সাথে নৃত্যম; ‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে’ গানের সঙ্গে নন্দন কলাকেন্দ্র; ‘দে তালি বাঙ্গালী’ গানের সঙ্গে নৃত্যালোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র; ‘কারার ঐ লৌহ কপাট ও শিকল পরা ছল মোদের’ গানের সাথে রেওয়াজ পারফর্মিং আর্টস সেন্টার; প্রদীপ নাচ করেন অন্তর দেওয়ান ও তার দল।

একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রোমানা ইসলাম খান, শাহীন হোসেন, সুষমা বিশ্বাস, সিরজুস সালেকিন, ইউসুফ খান, পুজা দাস তান্নি, আলমিনা নীতু, জি এম রহমান রনী, সানজিদা লাভলী, জেবুন্নেছা নিঝুম। সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন রবীন্দ্র সংগীত সমন্বয় পরিষেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের শিল্পীবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন ফারজানা করিম ও দিলরুবা সাথি।

বিজয় দিবসে নাটক পাড়া

এবারও বিজয় দিবসে মঞ্চস্থ হয় নাট্যদল ‘থিয়েটার’ প্রযোজিত আলোচিত নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। নাটক সরণির মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে বিজয় দিবসে নাটকটির বিশেষ প্রদর্শনী হয়। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। পরবর্তীতে নাটকটির নবরূপায়ণ করেছেন সুদীপ চক্রবর্তী।

বিজয়ের সন্ধ্যায় ম্যাড থেটারের তৃতীয় প্রযোজনা ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’ নাটকটি জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়। অ্যানা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী থেকে নাট্যরূপ দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম এবং নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী আনিসুল হক বরুণ। ‘অ্যানা ফ্রাঙ্ক’ নাটকটি আর্য মেঘদূতের একক অভিনয়।

শিশু একাডেমি

গৌরবময় বিজয়ের ৫১ বছর উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে ৫১ ফুট ক্যানভাসে রং তুলিতে সোনার বাংলাদেশ আঁকলো শিশুরা। একই সঙ্গে বিজয় দিবসে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে যাত্রা শুরু করলো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এসব কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুজিবনগর সরকারের প্রচার শাখার চিত্রশিল্পী বীরেন সোম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামান, মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক আবেদা আক্তারসহ বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে দুজন শিশু বিজয় দিবস নিয়ে তাদের অনুভূতি ও অভিব্যক্তি তুলে ধরে।

প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পর্যায়ে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে জাতিকে স্বাধীনতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

চ্যানেল আই

চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে ‘ঐক্যডটকমডটবিডি চ্যানেল আই বিজয় মেলা ২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকাল ৫২টি লাল সবুজ বেলুন ও সাদা কবুতর উড়িয়ে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, আলোক হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমাস হোসেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর আবদুল মান্নান চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রস্তাবক ও সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান প্যাটেল প্রমুখ। ‘ঐক্যডটকমডটবিডি চ্যানেল আই বিজয় মেলা’ পাওয়ার্ড বাই ‘আলোক হেলথ কেয়ার লিমিটেড।

মেলার উদ্বোধনী পর্বে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পীরাসহ বিভিন্ন অঙ্গণের বিশেষ ব্যক্তিত্বরা। নানা আয়োজনে পালিত এবারে বিজয়ের ১০জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান ও উত্তরীয় এবং পরিয়ে দেন চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ। দেয়া হয়েছে এবার ৫০ হাজার টাকা সম্মাননা। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীন হোসেন, কিসলু, আলী আজগর, হাসিম উদ্দিন, ওবায়দুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন এবং মোস্তাফিজুর রহমান, শাখাওয়াত পাটোয়ারি, হায়দার আলী খান। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড চ্যানেল আই এর পরিচালক মুকিত মজুমদার বাবু প্রত্যেকের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন। সম্মাননা প্রদানের পাশাপাশি ছিল নৃত্য পরিবেশনা, দেশের গান, কবিতা আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

ডিআরইউ’র শ্রদ্ধা

মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। সকাল সাড়ে ৮টায় সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের নেতৃত্বে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি দীপু সারোয়ার, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম, নারী বিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেজুতি, ক্রীড়া সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সাস্কৃতিক সম্পাদক মিজান চৌধুরী, কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মনির মিল্লাত, ইসমাইল হোসাইন রাসেল, মোজাম্মেল হক তুহিন এবং মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ডিআরইউর সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান, সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন মাহতাব ও স্থায়ী সদস্য সৈয়দ আখতার সিরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু, সহ-সভাপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল এর সহযোগিতায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণের শোভাবর্ধনে ফুল গাছ রোপন করা হয়। এছাড়াও ডিআরইউ চত্বরে উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে বই বিতরণ করা হয়।

ঢাকা কলেজ

কোনো অপশক্তিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অগ্রযাত্রাকে নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শুক্রবার ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজির উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজকে শহীদের রক্তস্নাত এই বাংলায় তাদের দেওয়া বিজয়ের দিনে দাঁড়িয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি কোনো অপশক্তিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অগ্রযাত্রাকে নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেব না। আজকের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আবার মাঠে নেমেছে। যারা তাদের শাসনামলে দুঃশাসন কায়েম করেছিল, দুর্নীতি দুঃশাসন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সাংবাদিক নির্যাতন, নারী নির্যাতন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। সেই দুঃশাসনকে মানুষ কীভাবে বিশ্বাস করবে? তাই তাদের অনেক রকমের আস্ফালন ও কথা সত্ত্বেও মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। মানুষকে সাথে না পেয়ে এখন তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি লবিস্ট নিয়োগ করেছে।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। স্বাগত বক্তব্য দেন মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মনিরা বেগম।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন

ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার দীর্ঘ লড়াইয়ের পরিক্রমায় ১৯৭১ সালে বাঙালী জাতি ৩০ লক্ষ শহীদানের আত্মত্যাগ ও চার লক্ষাধিক নারীর মর্যাদাহানির গ্লানির উপর দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বুকে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্যের বিরুদ্ধে সীমাহীন ত্যাগ আজও অবিস্মরণীয় হয়ে আছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের আয়োজিত ‘কথায় গানে বিজয় দিবস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট এস এম এ সবুর, জয়ন্তী রায়, ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল ওয়াহেদ, ঢাকা মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব জুবায়ের আলম প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App