×

খেলা

ইয়াসিন-লরিস শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২০ পিএম

ইয়াসিন-লরিস শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে হারিয়ে আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় মরক্কো। অপরদিকে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। আফ্রিকা-আরব অঞ্চলের ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। আর ফ্রান্সের ফরোয়ার্ডদের পাশাপাশি জয়ের নায়ক দলটির অধিনায়ক ও গোলরক্ষক হুগো লরিস। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নায়ক হবেন কোন গোলরক্ষক প্রশ্ন ফুটবলপ্রেমীদের মনে।

দল সেমিফাইনালে উঠলেও এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড়ের কাছ থেকে গোল হজম করেনি মরক্কো। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান তাদের গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোর। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী বেলজিয়ামকে হারিয়ে দেয় ২-০ গোলে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়লাভ করে তারা। তবে যে গোলটি মরক্কোর জালে জড়ায় সেটি ছিল আত্মঘাতী গোল। এরপর শেষ ষোলোতে স্পেনের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে টাইব্রেকারে স্পেনের কোনো পেনাল্টি শটই জালে ঢুকতে দেননি ইয়াসিন। স্পেনের কার্লোস সোলের, সার্জিও বুসকেটসরা যেদিকেই শট নিয়েছেন, সেদিকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বোনো। তার বিশ্বস্ত হাতে আটকে গেছে স্পেনের শেষ আটে ওঠার স্বপ্ন।

স্পেন-মরক্কোর মধ্যকার ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ানোর আগে দুটি দারুণ সেভ করেন বোনো। ম্যাচ পেনাল্টি শুটআউটে যাওয়ার অন্যতম কারণ এটি। পেনাল্টি শুটআউটে তার রেকর্ড অবিশ্বাস্য। ক্যারিয়ারে ২৬ শতাংশ পেনাল্টি ফিরিয়েছেন বোনো। এখন পর্যন্ত ৫০টি পেনাল্টি শটের মুখে দাঁড়ানো দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষক ফিরিয়েছেন ১৩টি শট।

১৯৯১ সালে কানাডার মন্ট্রিলে জন্মগ্রহণ করেন ইয়াসিন। অল্প বয়সেই তিনি পরিবারের সঙ্গে মরক্কোয় যান। মাত্র ৮ বছর বয়সে যোগ দেন ওয়াইদাদ কাসাব্লাঙ্কা নামের ক্লাবে। ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই খেলেন তিনি। ক্লাবটির সিনিয়র দলের হয়ে ১১ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তরুণ বোনো। মরক্কোর জাতীয় দলে ২০১৩ সাল থেকে নিয়মিত মুখ বোনো। ২০২১ আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে ৪ ম্যাচ এবং বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ৮ ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। আর বিশ্বকাপে এসে তো চমকেই দেন। তবে আরো আগে তার নাম ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে বেশ জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছে। ২০২০ ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেভিয়ার সেই বিখ্যাত ২-১ গোলের জয়ে গোলপোস্টের নিচে রীতিমতো দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বোনো, দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন ৬টি শট। ওই আসরের ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা উদযাপন করে সেভিয়া। সেবার ২ গোল হজম করলেও ২টি দারুণ সেভ করেন বোনো। এরপরই তাকে চার বছরের নতুন চুক্তি উপহার দেয় স্প্যানিশ ক্লাবটি।

অপরদিকে ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হুগো লরিসও রয়েছেন দারুণ ছন্দে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার মাধ্যমে ফ্রান্সের অধিনায়ক হিসেবে সর্বাধিক ১৪৩ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন তিনি। ২০১৮ বিশ্বকাপে শতকরা ৬৭ ভাগ শট ঠেকিয়েছেন লরিস। এবার ৪০ ভাগ। এতে অবশ্য লরিসের ওপর থেকে দৃষ্টি সরছে না কারো। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছেন লরিস। আবারো ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতাতে মরিয়া এই গোলরক্ষক।

২০০৮ সালে ফ্রান্সের জার্সি গায়ে জড়ান তিনি। এরপর ২০১০ সালের নভেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই প্রথম অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেন লরিস। ১২ বছর ধরে ফ্রান্সের নেতৃত্ব দিয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপ জিতেছেন লরিস। ২০১৮ বিশ্বকাপ যে দলটিকে নিয়ে জিতেছিলেন লরিস সেখানে বেশ পরিবর্তন এনেছেন দিদিয়ের দেশম। বিশেষ করে লরিসের সামনে থাকা রক্ষণভাগে দেশম যে শুরুর একাদশ খেলাচ্ছেন সেখানে শুধু গত আসরে খেলা রাফায়েল ভারানেই আছেন। এরপরেও দলকে তুলেছেন সেমিফাইনালে। তাই খেলোয়াড়দের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই হবে মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো এবং ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিসের মধ্যে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App