×

জাতীয়

২ জঙ্গি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন জামায়াতের আমির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:১০ পিএম

২ জঙ্গি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন জামায়াতের আমির

ছবি: ভোরের কাগজ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ছেলের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততায় দায়ের করা সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মো. শফিকুর রহমানের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল চারটা ২০ মিনিটে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এই আদেশ দেন।

রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাসার বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম এবং জামাতুল আনসার হিল হিন্দাল শারক্বিয়া সদস্যদের জঙ্গি কার্যক্রম অব্যহত ও বেগমান রাখার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির শফিকুর রহমান।

জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়ে আরও বলা হয়, রাফাতের পিতা জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, রাফাত ও আরিফ ফাহিম পরষ্পরের আত্মীয়। আরিফ ফাহিমের পিতা বাসেদ মিয়া জামায়াতে ইসলামীর সিলেট দক্ষিণ জেলা শাখার সূরা সদস্য। তদন্তকালে জানা যায়, জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা রাফাতের নেতৃত্বে প্রায় সময় শফিকুর রহমানের সিলেট শহরের সবুজবাগের বাড়িতে সাংগঠনিক মিটিং করতো। রাফাত সাদিক জিঙ্গাসাবাদে জানায়, ২০২১ সালে সেসহ ১০ জন আরাকানে জিহাদ করার উদ্দেশ্যে যখন তারা হিযরত করে তখন তাদের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং জিহাদের উদ্দেশ্যে হিযরত করার বিষয়টি তার পরিবার বিশেষ করে তার বাবা শফিকুর রহমান পুরোপুরি অবগত ছিলেন।

পরবর্তীতে বান্দরবানে নাইখ্যাংছড়িতে সীমান্তে রোহিঙ্গা জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে মিটিং করা শেষে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে তারা সিলেটে আসার বিষয়ে শফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। শফিকুর রহমান তার নিজস্ব ব্যবস্থা ও পৃষ্ঠপোষকতায় তার লোকজন পাঠিয়ে দুইটি গাড়িতে করে হিযরত করা ১১ সদস্যকে বান্দরবান থেকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। শফিকুর রহমান তার ছেলে রাফাত ও আরিফ ফাহিমদের বাকি নয়জনের কাছ থেকে আলাদা করে ঢাকায় নিয়ে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখে।

তাই রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম ও জামাতুল আনসার হিল হিন্দাল শরক্বিয়ার সম্পৃক্ততা ও তাদের নাশকতার পরিকল্পনাসহ দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার পরিকল্পনার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যে শফিকুর রহমানকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।

এরআগে এদিন বিকেল তিনটা ৩০ মিনিটের দিকে জামায়াতে আমিরকে সিএমএম আদালতে হাজির করে হাজতখানায় নেয়া হয়। পরে ৩ টা ৪০ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাসার শফিকুর রহমানকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে এ আবেদন করেন। আসামি পক্ষ থেকে রিমান্ডের বিরোধিতা করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ডের জোর দাবি জানানো হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যাত্রাবাড়ী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুর রহমান রিমান্ডের তথ্য জানান।

এদিকে, এদিন জামায়াতে আমিরের হাজিরাকে কেন্দ্র করে আদালতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। পুলিশসহ কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট আসামিকে আনা নেয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেন।

এর আগে গতকাল সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত একটায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে জামায়াতের আমিরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি টিম। জামায়াতের আমিরের ছেলে রাফাত সাদিকসহ আরও দুজন তিন দফা রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App