×

জাতীয়

সংস্কৃতির হাত ধরে সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:২১ পিএম

সংস্কৃতির হাত ধরে সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে

ছবি: ভোরের কাগজ

সংস্কৃতির হাত ধরে সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে

ছবি: ভোরের কাগজ

সংস্কৃতির হাত ধরে সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে

ছবি: ভোরের কাগজ

একটি গোষ্ঠী সম্প্রীতির বাংলাদেশকে সংঘাতের বাংলাদেশে পরিণত করতে চায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কারণ তাদের অনেকে ফাঁসিতে ঝুলেছে। এসব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সংস্কৃতির হাত ধরে সম্মিলিতভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। নইলে নতুন প্রজন্ম ভুল পথে যাত্রা করবে।

‘স্পর্ধায় তাড়াব ধেয়ে আসা কালো’ স্লোগানে রাজধানীর কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ‘বিজয় উৎসব ২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকালে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফেরদৌসী। তবে বুধবার থেকে রাজধানীর ৯ মঞ্চে এক যোগে চলবে এ উৎসবের কার্যক্রম।

সম্মিলিত সাংস্কুতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, ঝুনা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য কবি মুহাম্মদ সামাদ, নৃত্য শিল্পী মিনু হক। স্বাগত বক্তব্য দেন আহমেদ গিয়াস। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জোটের অর্থ সম্পাদক আখতারুজ্জামান। কবিতা আবৃত্তি করেন মীর বরকত।

[caption id="attachment_390635" align="aligncenter" width="1386"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, নির্যাতন, ধর্ষণ এসবের মূল্যে পেয়েছি স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে সবার আগে ভালো মানুষ এবং সৎ মানুষ হতে হবে। স্বাধীনতা অর্জন যত সহজ রক্ষা করা কঠিন। তাই সবার আগে ভালো হতে হবে।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, কিছু অন্ধকারের অপশক্তি দেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট করে দিতে চায়। তাদের বিপরীতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের যে প্রত্যয় তা সাংস্কৃতিক সংগ্রামের প্রত্যয়।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহারের কারনে দেশটা বিভাজিত হয়ে গেছে। এখানে ধর্ম যার যার। রাজনীতিতে ধর্ম যেন ব্যবহৃত না হয়। এটাকে পুঁজি করে দেশে যেন কোনো রাজনীতি না হয়। রামেন্দু মজুমদার বলেন, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এসব শক্তিকে আমরা মোকাবেলা করতে চাই। তার জন্য বর্ষব্যাপী একটি সাংস্কৃতিক জাগরণের কর্মসূচি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোর গ্রহণ করেছে। আমি আশা করব সবাই এতে যোগ দেবেন। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে।

মফিদুল হক বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে অন্ধকারের শক্তি বাংলাদেশে যে হিংস্রতা সঞ্চার করেছিল। সেই আক্রমণের শিকার হয়েছে মুক্তিবুদ্ধির তরুণেরা। সেই শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। এদের সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে রুখে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের কথা বলে কেউ যেন ব্যাংক লুটের সঙ্গে সামিল হয়ে না যায়, তাহলে তাকে কখনোই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলা যায় না। যারা লুটপাট করছে তাদেরকে অবশ্যই চিহ্নিত এবং প্রতিহত করতে হবে তারা যেন কোনভাবে রাজনীতির ছত্রছায়ায় তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ না পায়।

[caption id="attachment_390636" align="aligncenter" width="1376"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

মফিদুল হক বলেন, যে বাংলাদেশের জন্য এ দেশের মানুষ অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, যেই বাংলাদেশের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার রক্ত দিয়ে এই মাটিকে সঞ্চিত করেছেন, সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে দীক্ষিত করে আমরা সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

১৫ আগস্ট রাষ্ট্রিয় অপঘাত ছিল না, ছিল সাংস্কৃতিক অপঘাত এমন মন্তব্য করে নাসির উদ্দীন বাচ্চু বলেন, উন্নয়ন হয়েছে। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে এনেছে। কিন্তু ৭৫ থেকে যেভাবে দেশ চলে এসেছে সেটা আবার ৪৭ এর মতো বিভাজিত হতে যাচ্ছে। বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যে বাংলাদেশের জন্ম সেই দেশটিকে এখন উল্টো পথে হাঁটতে দেখছি। এসব রুখে দিতে আমাদের সম্মিলিভভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে সংস্কৃতির হাত ধরে।

মুহাম্মদ সামাদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মুলে ছিল সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। সেই বাংলাদেশকে সাংস্কৃতিক জাগরনের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতিময় করে তুলতে হবে, এবং সংস্কৃতির মধ্য দিয়েই মানুষের বাচার প্রেরণাকে উদ্বুদ্ধ করতে।

স্বাগত বক্তব্যে আহমেদ গিয়াস বলেন, যে কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সেই অধ্যায়কে প্রতিহত করব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও মুক্তিযুদ্ধের গান, বিজয়ের কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App